এতদিন আমারা কামার-কুমোরদের কথা শুনেছি।তারা কীভাবে মাটি দিয়ে জিনিস বানায়,আজ সেসব কথা জানবো।

একটা পরিচিত নাম কুমোর। তারা এমন কিছু জিনিস তৈরি করে, যা আমাদের মনে খোড়াক জুড়ায়। আর তারা আমাদের মনে ঠিক জায়গা করে নেয়। তারা মাটি দিয়ে বিভিন্ন কারুশিল্প তৈরি করে। আজ তাদেরই জীবন পরিচিতি তুলে ধরব।IMG_20180625_161506_639.JPG
কিছুদিন আগে অনেক গুলো বাংলার প্রাচীণ এতিহ্য পাওয়া যায়। আর এই এতিহ্যগুলোর বয়স প্রায় ৩০০-৪০০ বছর। যা ছিল কুমোরদের হাতে তৈরি।বাংলাদের কিছু কিছু জায়গায় কুমোরদের বসবাস।আর কিছু কুমোর মিলে তৈরি হয় একটা কুমোর পাড়া।তারা সেখানে মিলেমিশে মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করে। কিন্তু সব ধরনের মাটি দিয়ে তারা কাজ করে না। কেননা নির্দিষ্ট মাটি রয়েছে যা দিয়ে হরেক রকমের জিনিস তৈরি করে।সেসকল জিনিস হলঃ পুতুল,হাতি, ঘোরা,সড়া,পাতিল,বাটনা,কলস,পাড়ি,চাড়া,মন্দিরের সকল দেব দেবী ইত্যাদি তারা তৈরি করেন।আর মানুষ নিজের প্রয়োজনীয় কাজে এসকল জিনিস দৈনন্দিন ব্যবহার করে।কুমোররা অনেক যত্ন সহকারে প্রথমে মাটি দিয়ে এসব জিনিস তৈরি করে।তারপর তারা এসব জিনিস রোদে শুকাতে দেয়। তারপর এসব জিনিসকে পুড়ে। আর তারা যেখানে বস্তুগুলোকে পোড়ে,সে জায়গাটাকে বলে পইন। জিনিস গুলো পোড়ানো হলে ১ দিন পর সেগুলো সংগ্রহ করা হয়। তারপর সেগুলোকে রঙ করে বাজারজাত করা হয়। আর ক্রেতা সহজেই এগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এভাবেই কুমোররা জিনিস তৈরি করে। তারা সবাই অনেক কষ্ট সহ্য করে, কিন্তু তারা তারপরও এ পেশা ত্যাগ করে না। IMG_20180626_083206.jpg
বস্তু গুলোকে পোড়ানোর জন্য তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়। তারা বিভিন্ন জায়গার বাঁশ ঝারায় ঘুড়ে বেড়ায়। এবং বাঁশ ঝারের শুকনো পাতা সংগ্রহ করে। কিন্তু তাদের এই পেশাটায় তেমন কোনো অর্থ উপার্জন হয় না। তারপরও তারা বাজার থেকে কাঠের গুড়া আর পেট্রল কিনে আনে সেগুলোকে পোড়ানোর জন্যে। আর এই পোড়ানো বস্তু গুলোকে বলা হয় মৃৎশিল্প,যা বাংলার একটা ঐতিয্য। আর যারা তৈরি করে তাদের বলে মৃৎশিল্পি। প্রাচীণ কালে কুমোররা এভাবে মৃৎশিল্প তৈরি করেছিল।কিন্তু যুগের পর যুগ অতিক্রম হবার পর আজ সেগুলো মাটি খুড়ে পাওয়া যাচ্ছে।IMG_20180625_161854_594.JPG
কিন্তু বর্তমানে এ কুমোররা আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আর সেই সাথে আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মৃৎশিল্প,আর প্রাচীণ এতিহ্যগুলো। মূলত হিন্দু সম্প্রদায় লোকেরা কুমোরের পেশায় নিয়জিত থাকতো। কিন্তু আজ বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রতি বৈষম্য করায় এ পেশা হারিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দেশের মধ্যে অনেক শিল্প কারখানা তৈরি হচ্ছে। আর তারা উন্নত জীবন যাপনের জন্য সেখানে কাজ করতে যাচ্ছে। ফলে আমরা কুমোরদের হারিয়ে ফেলতেছি। সেই সাথে আমাদের এতিহ্যগুলোও। আমাদের অসচেতনতার কারণে ভবিষ্যতে আমাদের সন্তানরা কুমোরদের চিনতে পরবে না। তাদের কথা জানতে চাইলে তাদের জাদুঘরে যেতে হবে। আর তাদের নিদর্শন দেখতে হবে।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
4 Comments