নারী কি শুধুই নারী নাকি একজন মানুষ ?

আমাদের আশেপাশের অনেকের মুখেই শুনি নারী মায়ের 'নারী মায়ের জাত'। কিন্তু সেকি শুধুই একজন মায়ের জাত?তাহলে তো আমরা এভাবেও বলতে পারি যে পুরুষ বাবার জাত। অথচ এই কথা কাউকে বলতে শুনি না ,অন্তত আমি কখনো শুনি নাই। জীবনের প্রয়োজনে একজন নারীকে বিভিন্ন সম্পর্কের নারী হয়ে বাঁচতে হয় । সে শুধুই একজন নারী এবং একজন একজন মানুষ।


pixabay

নারী কখনো সে মা, কখনো সে বোন, কখনো সে স্ত্রী, আবার কখনো সে কন্যা অবশ্য আরো একটা রূপ পুরুষদের কাছে আছে নারীদের আর সেটা হলো পরনারী। আমাদের সমাজের পুরুষদের কাছে হাতেগোনা এই কয়েকটি রূপই আছে তাদের । কিন্তু দেখতে গেলে এমন রূপতো পুরুষদেরও আছে।
আমাদের সমাজব্যবস্থায় একজন পুরুষ বাঁচে তার নিজ পরিচয়ে । অনেক সময় তার কাজ কিংবা বংশ বিভেদে তাদের পরিচয় কিংবা পদবি বদলায়। কিন্তু তাদের প্রধান পরিচয় তারা পুরুষ। অপরদিকে আমাদের সমাজে অধিকাংশ নারীরই নিজের কোনো পরিচয় নেই। সমাজে তার পরিচয় হয় কারো স্ত্রী, মা কিংবা বোন হিসেবে কিংবা বিশেষ কোনো বাড়ির মেয়ে বা বৌ হিসেবে।পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থায় এটা অতি সাধারণ একটা চিত্র । এটা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যাথা নেই। সবচেয়ে বড়ো কথা বেশিরভাগ মেয়ে এটা নিয়ে সন্তুষ্ট ।


pixabay

এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারীরা ঘরে বাইরে নিপীড়িত। পুরুষের সিদ্ধান্তকেই নারীর মাথানত করে গ্রহণ করতে হয় এখনো। নিজের প্রতি নারীর নিজের তার তেমন কোনো অধিকার নেই। বিয়ে যতদিন না হচ্ছে ততদিন সে বাবা-মায়ের, বিয়ে হলে স্বামী বা শশুড়বাড়ির । কোথায় যাবে ,কি করবে ,চুল লম্বা রাখবে নাকি ছোট , জামা-কাপড় কেমন পরবে, কীভাবে পরবে সব সিদ্ধান্তই মূলত তাদের । অনেক সময় তাদের বাইরে যেতে হলেও সাথে পুরুসঙ্গী রাখতে হবে। আমাদের সমাজব্যাবস্থার দিকে তাকালে মনে হয় নারী জীবনের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য বিয়ে করে স্বামী-সংসার ও সন্তান জন্মদান ও তাদের লালন পালন করা ।
অথচ এটা করতে গিয়ে অনেক সময়ই সে তার নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দেয়। এটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না কারণ তাদের মতে এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময়ই তাকে অনিচ্ছাসত্ত্বেও আরেকজনের ঘরে, আরেকজনের হয়ে বেঁচেথাকতে হয় কারণ তার নিজের কোনো পরিচয় বা ঘর নেই । আর এভাবেই চলছে আমাদের সমাজ। যার কারণে অনেক সময় নারীর প্রতি অন্যায় করা হলেও তারা মুখ বুজে সহ্য করে থাকে কারণ এটা নিয়ে কথা বললে পরিবারের সন্মান ক্ষুন্ন হবে। আর এটাই সমাজের নিয়ম হয়ে গেছে।


pixabay

নারীর অধিকার শব্দটি আমাদের সমাজে খুব প্রচলিত একটা শব্দ। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্ব সহকারে উপরে রাখা হয়। কিন্তু এটা অনেকেই ভুলে যান যে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আগে তাদেরকে নারী হিসেবে মানতে হবে। একজন পুরুষের মতোই একজন নারীও যে মানুষ, এই বিষয়টি সবার আগে মানতে হবে । তাকে যদি মানুষই না মনে করা হয় তাহলে অধিকার প্রতিষ্ঠা কার জন্য করা হব। এমনকি ঘরোয়া কোনো জায়গাতেও নারী মতামত প্রকাশ করতে চাইলে অনেক সময়ই তাকে শুনতে হয় তোমার এখানে কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। এসব জায়গাতে নারীকে একেবারেই বাদ দেয়া হয়। আবার কোথাও কোথাও নারীকে পুরুষের অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।একই পরিশ্রম করে অথচ মজুরি অর্ধেক।


pixabay

আর এসব কারণেই পুরুষশাসিত এই সমাজে নারী নির্যাতন চলছে। আর নারীকে যতক্ষণ মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেয়া না হবে ততক্ষন চলতেই থাকবে। এমনকি সে ধর্ষণের শিকার হলেও অনেক সময় তাকে বলতে দেয়া হয় না কারণ সন্মান ক্ষুন্ন হবে এটা ভেবে।কি অদ্ভুত চিন্তা ভাবলে অবাক হতে হয়, ধর্ষণের শিকার নারীর বর্ণনা প্রকাশিত হলে তাকে হেয় করে সমাজ। ধর্ষণকারীর সম্মানহানির পরিবর্তে বরং ধর্ষণের শিকার নারীর সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হওয়ার হুমকির মাঝে থাকতে হয়।


pixabay

নারীর জন্য বাড়তি কোনো কিছুর কিংবা কোনো বিশেষ অধিকার প্রয়োজন নেই। নারীকে শুধু মানুষ হিসেবে দেখলেই চলবে । একজন পুরুষ যদি মানুষ হয়ে থাকে, তবে নারীও নিশ্চয়ই মানুষ নারী-পুরুষ সমান অধিকার নিয়ে সমাজে থাকবে শুধু এই নিশ্চয়তা দিলেই হবে । আর এটা করার দায়িত্ব আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের মানুষের। তাকে শুধু একজন মানুষ হিসেবে বাঁচতে দেয়া হোক।

In our society, women have no such identity of their own. She is known as someone's mother, daughter, or wife. She often has to endure injustice because she has nowhere to go or is afraid of safety. My goal in writing is to treat her with the respect she deserves as a person. I wrote the entire article in Bengali because it is my native language and allows me to express myself better.


◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦

image.png

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
18 Comments