আমার দুই ছেলের মাঝে বয়সের পার্থক্য মাএ ১৪ মাস। ছোট ছেলের জন্মের সময় আমার বড়ো ছেলে বলতে গেলে তখন কিছুই বুঝতো না।তারপরও অনেককেই বলতে শুনতাম যে ,
তোমার আদরের দিন শেষ, এ-ইতো আর মাএ কয়েকটা দিন।
তখন আমি নিজেও এসব বিষয় তেমন কিছু বুঝতাম না যার কারনে এসব কথার কোন প্রতিবাদই করি নাই।চুপচাপ শুনে যেতাম।কিন্তু এখন বুঝতে পারি যে তখন এর প্রতিবাদ না করে অনেক ভুল করেছি।ও হয়তো ছোট ছিলো বলে ওর ওপর তেমন একটা প্রভাব পরে নাই, কিন্তু ওর বয়স যদি কিছুটা বেশি থাকতো তাহলে এর প্রভাব ওর মনের ওপর মারাত্মক হতে পারতো।
পরবর্তী সময়ে এই জিনিসটা আমি অনেকবার খেয়াল করেছি।
একটা বাচ্চার কাছের মানুষই তার মনের মাঝে এক ধরনের হিংসা ঢুকিয়ে দিয়ে থাকে তার ছোট ভাই বোনের সাথে। আবার আমরা- বাবা মায়েরাও একই কাজ করে থাকি। তুলনা করি বড় কিংবা ছোট ভাই-বোনের সাথে । একটা বাবা-মায়ের দুটো বাচচার মেধা, চালচলন একরকমই হবে এমন কোন কথা নেই।
আমার নিজের পরিবারের মাঝেও দেখেছি একটা বাচচা অতিরিক্ত দুষ্ট। শুধু দুষ্ট না মেধার মাঝেও রয়েছে বিস্তর পার্থক্য দেখেছি। এর ফলাফল হিসেবে তার মাকেই দেখেছি তুলনা করতে। এমন না যে ওর মা অসচেতন কিন্তু একটা সময় ধৈর্য হারিয়ে ফেলেই করেছে কাজটা। কিন্তু এর ফলাফল আমি চোখের সামনেই দেখেছি।
এখন কথায় কথায় বলে, বড় ছেলেতো এজন্য। এর প্রভাব যে শুধু ওর ওপরই পরেছে এমন না এটা কমবেশি আমার ছোট ছেলের ওপরও পরেছে।কারন ও এসে আমার ছেলেকে বলে যে,আরে তুইতো ছোট ছেলে। আর আমার ছেলেও এটা কিছুটা বিশ্বাস করে।
যদিও কথাগুলো খানিকটা পারিবারিক তার পরও এর অবতারণা এই জন্যই করলাম যে, আমরাই বাচ্চাদের মাঝে এই সিবলিং জেলাসি ঢুকিয়ে দিয়ে থাকি।।কখনো সেটা খেলাচ্ছলে আবার কখনো বা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে।
অনেক বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেই খেয়াল করেছি, এক সন্তান এর প্রতি সামান্য পরিমানে বেশি দূর্বলতা থাকা। এটা হয়তো সেই বাবা মা খেয়ালই করেন না।তার অজান্তেই ঘটে যায় কিন্তু সেই ভুক্তভোগী বাচচাটা ঠিকই খেয়াল করে। এতে করে সে একধরনের তীব্র মানসিক কস্টও জেলাসিতে ভুগে থাকে।সে হয়তো মুখে কিছুই বলে না কিন্তু এর প্রভাব তার মনের উপর ঠিকই পরে। প্রথমত, এধরণের আচরণ করাটা একদমই ঠিক না। তারপরও যদি কারো মাঝে এধরণের একতরফা কিছু থাকে তাহলে তাকে এটা কন্ট্রোল করা উচিত।
শুরুতেই যে কথাটা বলছিলাম যে,নতুন শিশুর আগমনে বড়ো বাচচাটাকে মজা করে মানুষ ভয় দেখায়।এমনিতেই ছোট বাচার প্রতি কিংবা কোন বাচচা যদি অসুস্থ থাকে তাহলে মানুষ কিছুটা বেশি নজর দেয়। এতে করে বড় শিশুটার খারাপ লাগাটাই সাভাবিক।এসময়ে তার প্রতি যদি আসলেই কিছুটা মনযোগের অভাব ঘটে তাহলে বাসার বাকি সদস্যদের এগিয়ে আসা উচিত। সেই সাথে তার বাবা মাকেও চেষ্টা করা উচিত তাকে সময় দেয়ার এবং তার মাঝে এই বিশ্বাস স্হাপন করা উচিত যে, তাকেও আপনি ভালোবাসেন এবং সবসময়ই তার পাশে আছেন।
বাচচাদের মাঝে প্রায়ই ঝামেলা কিংবা ঝগড়া -বিবাদ লেগেই থাকে।এসব মিটমাট করতে গেলে একজনের পক্ষ নেয়াটাই স্বাভাবিক। এর ফলে যার পক্ষ নেয়া হয় না সে মানসিক ভাবে কস্ট পেয়ে থাকে।তাই এইসব ঝগড়া বিবাদ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থেকে ওরা যাতে ওদের সমস্যা মিটিয় ফেলতে পারে সেই শিক্ষা দেয়া উচিত। সাথে দুজনের মাঝে যাতে একটা ভালো বন্ডিং গড়ে উঠে এদিকটায় সবসময়ই খেয়াল রাখা উচিত। সমানভাবে দায়িত্ব ভাগ করে দিন।কাউকেই সাহায্য না করে ওদেরকে বলেন যে একজন যেন আরেকজনকে প্রয়োজনে সাহায্য করে।
তাহলেই হয়তো আপনার শিশু তার এই জেলাসি থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবে।
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦