Assalamu Alikum
আসা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করবো আমেরিকার সবচেয়ে ঘৃণিত এক সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে। তো চলুন সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক।
কারো কাছে পরিচিত মিলওয়াকি ক্যানিবল নামে আবার কারো কাছে পরিচিত মিলওয়াকি মনস্টার নামে, তবে প্রকৃত নাম জেফরি ডাহমার। জন্ম হয় তার ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উইকিনসনে । সে ১৯৭৮ সালে স্নাতক পাশ করে।
জেফরি তার মাত্র ৩৪ বছর বয়সে কমপক্ষে ১৭ টি হত্যার কথা অনুমান করা যায়। জানা যায় সাধারণত সে ১৯৭৮ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যেই তার জীবনের বেশিরভাগ খুন করেছে। তার প্রথম খুনটি করে সে ১৯৭৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে। জেফরিকে ১৯৮৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর একটি যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রথম গ্রেফতার করা হয়।
জেফরি তার শিকারকে বাসায় নিয়ে অত্যাচার করত, হত্যা করতো এবং তারপরে শরীর ব্যবচ্ছেদ করে নরমাংস ভক্ষণ করতো বলে জানা যায়। জেফরি প্রতি সপ্তাহে একটি করে খুন করা শুরু করে ১৯৯১ সাল থেকে। গ্রেফতার এর পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে এক অদ্ভুত তথ্য, তদন্ত কালেতার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন অদ্ভুত ও ভয়ংকর জিনিস। তার মাঝে কিছু জিনিস হচ্ছে - কাটা মাথা, অত্যাচারিত ব্যক্তিদের ৭৪ টি পোলারয়েড ছবি, ড্রিল মেশিন, হ্যাণ্ডকাফ, এ্যাসিডে ভেজানো লাশ, রান্নাঘরে সাজিয়ে রাখা কাটা মুণ্ডু, অনেকগুলো মাথার খুলি, ফ্রিজে রাখা হৃৎপিণ্ড, ৫৭ ড্রাম এ্যাসিড, শুধু তাই নয় ৭টি মাথার খুলি ও পাওয়া যায় একটি মোমবাতির বেদীর সামনে।
ডাহমার এ ব্যাপারে প্রথম পুলিশ ১৯৯১ সালের ২৭ মে সিম্হাসোমফোন নামের এক ছেলেকে নগ্ন ওআহত অবস্থায় দেখে পুলিশ তাকে জিজ্ঞেস করলে জেফরির নাম নেয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে জেফরির সব কুকীর্তি ফাঁস হয়ে যায় ১৯৯১ সালের ২২ জুলাই তার হাত থেকে যখন এক ব্যাক্তি প্রাণে বেঁচে যায়। সেই ব্যক্তি পুলিশকে সবকিছু খুলো বলে এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং তাকে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
সে এক তদন্তে গোয়েন্দা প্যাট্রিক কেনেডির কাছে তার এই কুকর্ম স্বীকার করে এবং বলে - সে বেশিরভাগ মানুষকে প্রথমে অজ্ঞান করে খুলিতে এ্যাসিড ডেলে দিতো কোনো কোনো সময় আবার গরম পানি ঢেলে দিত। অতি নির্যাতন এর পরে যখন মানুষ মারা যেত তখন সে দেহ থেকে মাংস ভক্ষণ করতো এবং মৃতদেহ সংরক্ষণ করতো। তাকে বেদীতে রাখা ৭ টি খুলির কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলে - Place for meditation।
জেফরির বিচার কার্য চলা কালে আরো জানা যায় যে - বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, মেন্টেল ডিসঅর্ডার ও স্কিজোটাইপাল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার সনাক্ত হয় একই সাথে সে যে এক চতুর ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি সেটাও প্রমাণিত হয়। ১৫ টি হত্যাকাণ্ডের জন্য ১৯৯২ সালে তাকে দোষী সাবস্ত্য করা হয় এবং ৯৩৭ বছর জেল হয়। কিন্তু সে এর পরিবর্তে তার মৃত্যু দণ্ড দাবি করে। ১৯৯৪ সালের ২৮ নভেম্বর ক্রিস্টোফার স্কেভার নামক এক কয়েদির সাথে কারাগারের জিমে ঝগড়া বাধে এতে দুজন এই মারাত্মকভাবে আহত হয় এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের মাধেই আমেরিকার সব চেয়ে ঘৃনিত ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
জেফরিকে নিয়ে কিছু তথ্য চিত্র, হলিউড মুভি, গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে যার নাম -
★ তথ্য চিত্র :
- The Jeffrey Dahmer Files.
- Inside the mind about jeffeey Dahmer.
★ হলিউড চলচিত্র :
- My Friend Dhamer.
- Dhamer.
- The secret lif: Jeffrey Dahmer.
★ গ্রন্থ রচনা :
- The jeffrey dahmer story : an american nightmare.
- Dahmers confession: the milwaukee cannibals arrest statements.
- Jeffrey dahmer : a terrifying true story of Rape, murder & cannibalism.
তো বন্ধুরা এই ছিলো আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণিত ক্রমিক খুনির গল্প। আমি আসা করি আপনাদের তা ভালো লেগেছে। আমার পোস্টটি মনযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ আর না, আবার আসবো আপনাদের মাঝে নতুন একটি পর্ব নিয়ে। ততদিন ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।