মুভি রিভিউ: 12th Fail

হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটার নাম হলো "12th Fail". এই মুভিটার কাহিনী একটি গ্রামের ছেলের জীবন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তুলে ধরেছে অর্থাৎ কিভাবে সে তার জীবনের লক্ষ্যে সফলতা অর্জন করতে পেরেছে নানা বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

মুভির নাম
12th Fail
প্লাটফর্ম
hotstar
পরিচালকের নাম
বিধু বিনোদ চোপড়া
লেখকের নাম
বিধু বিনোদ চোপড়া, জাসকুনওয়ার কোহলি, অনুরাগ পাঠক
অভিনয়বিক্রান্ত ম্যাসি,মেধা শঙ্কর, আংশুমান পুষ্কর,হরিশ খান্না,গীতা অগ্রবাল শর্মা ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৭ অক্টোবর ২০২৩( ইন্ডিয়া )
সময়
২ ঘন্টা ২৬ মিনিট
মূল ভাষা
হিন্দি
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☀মূল কাহিনী:☀


স্ক্রিনশর্ট: hotstar

একটা গ্রামে বসবাসরত গরিব পরিবারের গল্প। এখানে মনোজ নামের একটা ছেলে বছরের পর বছর ১২ ক্লাসের পরীক্ষায় ফেল করতো। কিন্তু এর মধ্যে তার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী অর্থে কোনো ঘুষ বা অসৎ পথ অবলম্বন করে চলতো না বলে একদিন তাকে সাসপেন্ড করে দেয়। এখন পরিবার চালানোর মতো কেউ নেই, মনোজ যদি সেই বছর ১২ ক্লাস পাস করতে পারে, তাহলে একটা কাজ সে পেয়ে যাবে। কিন্তু যে স্কুলে সে পড়তো সেখানে মাস্টাররা পর্যন্ত টুকলি করিয়ে পাস্ করাতো, আর এইগুলো সম্পূর্ণ গ্রামের প্রধানের নির্দেশে হতো। একদিন অঙ্ক পরীক্ষার দিন মাস্টাররাই বোর্ডে অঙ্ক করিয়ে পাস্ করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় এবং ওই মুহূর্তে থানার ডি.এস.পি সেখানে চলে আসে আর এইসব দেখে ফেলে। এখন স্কুলের হেড যিনি সে সেই অফিসারকে ডেকে নিয়ে ঘুষ দেওয়ার ধান্দা করে। কিন্তু সেই অফিসার সেইসব প্রমান স্বরূপ ছবি তুলে গ্রেফতার করে নেয় আর সেই বছর ওই স্কুলের সব স্টুডেন্টস আবারও ফেইল করে। সেই সাথে মনোজও হতাশ হয়ে পড়ে।


স্ক্রিনশর্ট: hotstar

এখন সে আর তার বড়ো ভাই মিলে একটা ট্যাম্পু ম্যানেজ করে আর তাতে ভাড়া টেনে সংসার চালাতে থাকে, কিন্তু তাদের এই পরিকল্পনা দেখে গ্রামের কিছু লোকজন বাধা দেয় আর ঘুষখোর কিছু পুলিশ ডেকে তাদের থানায় ভরে দেয়। এরপর মনোজকে বলে যদি সে কোনো অফিসারকে বলে ছাড়াতে পারে তাহলে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে, নাহলে তার বড়ো ভাইকে মেরে দেবে। এখন মনোজ সে ডি.এস.পি এর কাছে যায়, কারণ সে সৎ তাই অন্যায় কিছু হতে দেবেনা বলে তার বিশ্বাস। এরপর ওই রাতে তাকে নিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে আর মনোজ তার কাছে দাবি করে বসে যে সেও ডি.এস.পি হতে চায়। ফলে সেই অফিসার তাকে বলে এইসব চুরি, নকল ছাড়ো তাহলেই হতে পারবে। তার কথা শুনে পরের বছর আবারো সেই স্কুলে নকল এর কাজ শুরু হয়ে যায়,কারণ সেই ডি.এস.পি ট্রান্সফার হয়ে যায়। কিন্তু মনোজ টুকলি না করে নিজের মতো পরীক্ষা দিয়ে থার্ড ডিভিশন এ পাস্ করে। এরপর সে গোয়ালিয়র যায় ডি.এস.পি হওয়ার জন্য। কিন্তু বাসেই তার টাকা পয়সা সব চুরি হয়ে যায়।


স্ক্রিনশর্ট: hotstar

এরপর সেখানে প্রীতম বলে একজনের সাথে পরিচয় হয় আর তার শোনে যে আই পি এস অফিসার ডি.এস.পি এর থেকেও বড়ো, তখন সে সিদ্ধান্ত নেয় সে আইপিএস অফিসার হবে। আর তার জন্য দিল্লিতে গিয়ে upsc এর জন্য তৈরি হতে হবে। মনোজ প্রীতম এর সাথে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে গৌরী নামের একটি লোকের কাছে কোচিং এ ভর্তি হয়, কিন্তু তার কাছে টাকা না থাকায় সে ঘর মোছা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করতো আর রাতে গিয়ে পড়তো। এইভাবে সে চলতে চলতে প্রথম বছর মেইনস-এ ফেইল করে। তারপরেও সে হাল ছাড়েনি, সে আবারো ভালো একটা কোচিং এ ভর্তি হয় এবং সেখানেও কয়েকবার মেইনস-এ পাস্ করতে পারে না। আর লাস্ট একটাই সে দিতে পারবে। এর মধ্যে শ্রদ্ধা নামের একটি মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয় এবং তাদের দুইজনের মধ্যে সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভালোবাসায় পরিণত হয়। মনোজ শেষের দিকে আরো কঠিন জীবন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয় অর্থাৎ একদিকে তার বাড়ির দিকে সংসার চালানো আর একদিকে তার মেইনস পরীক্ষার প্রিপারেশন।


স্ক্রিনশর্ট: hotstar

সারাদিন রাত মিলিয়ে মাত্র ৬ ঘন্টা একটা ছোট রুমের মধ্যে পড়তো আর বাকি সময় আটা ভাঙাতো। এর মধ্যে শ্রদ্ধারও মেইনস ক্লিয়ার হয়ে যায় আর ইন্টারভিউতে পাস্ করে কালেক্টর হয়ে যায়। শ্রদ্ধা মনোজকে বিভিন্ন ধরণের নোটস দেয় এবং সহযোগিতা করে সমানে। তবে তাকে সেখান থেকে বের করে সেই গৌরী লোকটা তার বাড়িতে জায়গা দেয় আর সে পুরো ১ টা বছর মন দিয়ে পড়ে। এরপর সে মেইনস ক্লিয়ার করে এবং ইন্টারভিউ এর দিন যায় ঠিকই, কিন্তু তার ১২ ক্লাস ফেইল এর কথা শুনে প্রথমেই তাকে বের করে দেয়। কিন্তু যারা ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিল সবাই বিচার বিবেচনা করে অর্থাৎ তার সৎ আর মানবিকতার দিক বিচার করে চাঞ্জ দিয়ে দেয়।


☀ব্যক্তিগত মতামত:☀

এই মুভিটার গল্পের মধ্যে একটা মোটিভেশনাল বিষয় লুকিয়ে আছে। আসলে এই মুভিটা দেখার পরে নিজেরই মনে হচ্ছিলো যেন, চোখের সামনে বাস্তব কাহিনী দেখছি। মনোজ তার স্বপ্নকে এতো জঞ্ঝাটের মধ্যে দিয়েও নিভে দিতে দেয়নি, কারো যদি লক্ষ্য সুদৃঢ় থাকে তাহলে সে তার লক্ষ্যে অবশ্যই একদিন না একদিন পৌঁছাতে পারে আর তার একটা উদাহরণ এই মনোজ। আসলে এটা শুধু একটা মুভি বলবো না, এর মধ্যে যথেষ্ট শিক্ষামূলক একটি মুভি এবং অনেককিছু শেখার বিষয়ও আছে এই কাহিনীতে। একটা গ্রামের সাধারণ ছেলে একজন ডি.এস.পি এর একটা কথা শুনে সে তার লক্ষ্য স্থির করে এবং একটা অচেনা জায়গা দিল্লিতে লক্ষ লক্ষ ছাত্রদের মাঝে নিজেকে তৈরি করতে চলে যায় সৎসাহস নিয়ে। কখনো লাইব্রেরি কখনো বাড়ি ঘর দর পরিষ্কার করে তারপর নিজেকে তৈরি হওয়ার জন্য টাইম দেওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার। অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা ১-২ বার ফেল মারলে আর সামনে এগোয় না, কিন্তু মনোজ এখানে লাস্ট এটেম্পট পর্যন্ত নিজেকে অনেক কষ্টে তৈরি করে আর নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করে। শুধু তার নিজের স্বপ্ন বললে ভুল হবে, কারণ এটা তার বাবা-মায়েরও স্বপ্ন ছিল যে তাদের ছেলে আইপিএস অফিসার হয়ে এবং ইউনিফর্ম পরে তারপর বাড়িতে তাদের সামনে আসবে। এই মুহূর্তটা দেখার মতো ছিল। এই গল্পটা আসলে একটা বাস্তব জীবনের গল্প।


☀ব্যক্তিগত রেটিং:☀
৯.৯/১০


☀ট্রেইলার লিঙ্ক:☀



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
9 Comments