🔹🔷NARAYANGANJ TOUR🔷🔹
DATE:07-26-2021
আপনাদের সাথে আজকে দুইটা দিন অতিবাহিত করলাম। আপনাদের কাছে আমার নিজের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এবং ভালো লাগা গুলো গল্প করতে পেরে আমি নিজেও শান্তি অনুভব করছি। চলুন তাহলে আজকের অনুভূতির গল্পটা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেই। সবাইকে শুভ সন্ধ্যা জানিয়ে শুরু করছি আজকের ভ্রমণের গল্প।
২৬ জুলাই ২০২২. ক্লাসের ফাঁকেই হঠাৎ মাথার ভিতর চিন্তা আসলো ঘুরতে যাবো আজকে এবং এখনই। যেই বলা সেই কাজ। ক্লাসে বসে বসে বিরক্তিকর সময় কাটানোর থেকে কোথাও গিয়ে ঘুরে আসলে মন ভালো হবে। আর তাছাড়া আমিও তো ভ্রমণ পাগল। স্যারকে বললাম স্যার আমার জরুরি একটা কাজে এখনই ঢাকা যেতে হবে। জরুরি কাজের কথা শুনে স্যার আর বাধা দিলো না। বরং বলল অবশ্যই যাবা, জরুরি কাজ থাকলে একটা ক্লাস না করলেও এমন কিছুই হবে না। ব্যাস্!! কাজ হয়ে গেলো আমার। স্যার বলল তোমার আইডি নাম্বারটা দিয়ে যাও আমি তোমার উপস্থিতি নাম ডাকার হাজিরা খাতায় তুলে দিবো। আমি আমার আইডি নাম্বার দিয়ে দ্রুত বের হয়ে গেলাম ক্লাস থেকে। তারপর ক্যাম্পাস থেকে এক বড় ভাইকে সাথে নিয়ে দুপুর ৩:৩০ মিনিটে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। আমরা সাহেপ্রতাপ থেকে আল মোবারক বাসে উঠে চিটাগং রোড পর্যন্ত গেলাম।
তারপর সেখান থেকে আদমজী EPZ এর সামনে দিয়ে পৌঁছে গেলাম সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকাতে। প্রথমে কেমন যেন মনে হচ্ছিলো, তারপর একটা যায়গায় গেলাম। ওখানে গিয়ে মনটা ভরে গেলো। এতো সুন্দর যায়গা, আর এতো সুন্দর পরিবেশ। কেউ না গেলে বিশ্বাস করতে পারবে না। আমি আপনাদের দেখানোর জন্য কিছু ছবিও তুলে এনেছি আমার মোবাইল ফোনে।
আমরা প্রথমে হেটে হেটে গেলাম সেখানে৷ ওহ তার আগে আরেকটা কাজও সেরে নিলাম আমি। আমার ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছিলো। ব্যাটারিটা ঠিক করতে একটা পরিচিত দোকানে ফোনটা রেখে আসি। তারপর আমরা শুরু করলাম ঘুরাঘুরি। দীর্ঘ ১৫ মিনিট হাটার পরে আমরা একটা প্রকল্পের নির্মাণাধীন ভাঙা ব্রীজের উপর গিয়ে দাড়ালাম। ব্রীজের নিচে ছিলো পঁচা-ডোবা।
এলাকাটা নিরিবিলি, কিন্তু অনেক শান্তি পূর্ণ। সব থেকে অবাক করা বিষয় হলো আমরা যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে একটা বিমান আমাদের মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেলো। তখন কিছু সময়ের জন্য আমি নিজেকে ছোট্ট বেলাতে হারিয়ে ফেলেছিলাম। তারপর আমরা কিছুক্ষণ সময় কাটালাম।
তারপর ব্রীজের উপর থেকে চলে আসলাম ফোনের দোকানে। দেখি ফোন একদম রেডি করে রাখছে। তারপর সব থেকে খারাপ লাগলো ১৫০০ টাকা খরচ হয়ে গেলো ফোনের পিছনে। আমার ঘুরাঘুরির জন্য সব টাকা শেষ এখন। কি করবো কিচ্ছু বুঝে পাচ্ছি না। তারপর আমরা এক বড় ভাইয়ের বাসায় গেলাম। ওখানে গিয়ে পানি খেলাম। পানি খেয়ে আমরা অটোরিকশা করে আরও ৩০ মিনিটের রাস্তা পারি দিয়ে গেলাম এক আপুর বাসায়। সেখানে কিছু খাওয়া দাওয়া করলাম। তারপর আমরা বের হয়ে গেলাম আপুর বাসা থেকে। আপুর বাসা থেকে বের হয়ে একটা হোটেলে ঢুকলাম। গরম গরম মগলাই বানাতে দিয়ে আমরা আরামে গল্প করছিলাম। হঠাৎ দেখি ১৫ মিনিটের ভিতর মগলাই রেডি। আমরা মগলাই খেলাম।তারপর আবার দুধ চা অর্ডার করলাম। দুধ চা খেয়ে পেট একদম ভরে গেলো।
তখন বাজে রাত ৯টা। আমরা আবার সাহেপ্রতাপ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম নারায়ণগঞ্জ থেকে। বাস স্ট্যান্ডে এসে দেখি বাসের ভাড়া বেশি চায়। হাতে টাকাও নেই বেশি। তাই বাসের কন্টাকটরের সাথে একটু কথা কাটাকাটি করলাম৷ তারপর বাসে উঠলাম। সারা রাস্তা শুধু বিকালের কথাই মনে পড়ছিলো। অনেক ভালো একটা সময় কাটাইছিলাম ওই দিন।
রাত ১১ টার সময় সাহেপ্রতাপ পৌছালাম আমরা। তারপর নিজের ঘোরের দিকে চলে আসলাম। যদিও ভ্রমণটা ছোট্ট পরিসরে ছিলো। তারপরও অনেক মজা হয়েছিলো।
আজকে এই পর্যন্তই থাক। আবারও কথা হবে অন্য এক ভ্রমণ কাহিনি নিয়ে। ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন।