আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালই আছেন। আমি আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের দিনটি কিভাবে কাটল তা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।
প্রতিদিনের মতো আজকেও খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি। ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করি। তারপর হাত মুখ ধুই। হাত মুখ ধুয়ে সকালে খাবার খাই। খাবার খেয়ে আমাদের বাড়ির দক্ষিণ পাশে ধানের ক্ষেতে চলে যায়। আজকেও ধান মাড়াই করতে হবে। সেজন্য সকালেই ধানের ক্ষেতে চলে যায়। আজকে ৩ই মে ২০২৩।২০ই বৈশাখ। ১২ই শাওয়াল । যেহেতু এখন বৈশাখ মাস তাই প্রচুর পরিমাণে গরম। আমার এই সময়ে ধান মাড়াই করার কাজ শুরু হয়। এজন্য সকালে ধানের ক্ষেতে যাই ধান মাড়াই করার জন্য। আমি এখন আমার বাড়িতে আছি সে জন্য প্রচুর পরিমাণ কৃষিকাজ করতে হয়। নিজের সংসারের কাজ তাই নিজেকেই করতে হয়। কাজের অনুপাত অনুসারে শ্রমিক নিয়েও কাজ করতে হয়। এই বছর প্রচুর পরিমাণ তাপ থাকার কারণে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। তারপরেও নিজের কাজ নিজেকে করতেই হয়। আজকে ধান মাড়াই করার জন্য দুটো শ্রমিক নিয়েছি। একজনের নাম মোঃ নুর ইসলাম। আরেকজন নুর ইসলাম চাচার নাতি হয়। তারা দুইজনে মিলে আমাদের ধান মাড়াই করিতেছে। তারা দুজন খুবই পরিশ্রম করে। মূলত কৃষিকাজ ই প্রচুর পরিমাণ পরিশ্রমের কাজ। সারাদিন রোদ বৃষ্টির মধ্যে কাজ করতে হয়। আজকে এত পরিমাণ রোদ ও গরম যার কারণে কিছুক্ষণ পরপর পানি পান করতে হয়। কাজ করতে করতে দুপুর একটা বেজে গেল। তারপরে আমরা সবাই দুপুরের খাবার খেলাম। দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। বিশ্রাম নেওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার কাজে লেগে গেলাম।
অনেক রৌদ্রের মধ্যে ধান মাড়াই করতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। ধানের বাড়ি চোখে লাগলে চোখ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেজন্য আমি একটা কালো চশমা ব্যবহার করি। যেন মাড়াই মেশিনের সামনে গেলে কোন প্রকার ধানের বাড়ি চোখে না লাগে। প্রচন্ড গরমে শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। শরীরও প্রচুর পরিমাণে ঘামতে ছিল। কিছুক্ষণ পর আবার একটু পানি খেয়ে নিলাম। এভাবে কাজ করতে করতে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ধান মাড়া এর কাজ শেষ হয়। পরে ধানগুলোকে বস্তার মধ্যে তুলে ফেলি। এবং একটা মহিষের গাড়িতে উঠিয়ে দিই।
তারপর গাড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে চলে আসি। গাড়িওয়ালার নাম মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। সে সম্পর্কে আমার দাদা লাগে। তার দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলের নাম মোঃ পারভেজ হাসান। ছোট ছেলের নাম মোহাম্মদ আলিরাজ হোসেন। বড় ছেলে বাড়িতে সংসার করে ও পড়াশোনা করে। ছোট ছেলে ইন্টার পাশ করে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছে। সে এখন বর্তমানে সিলেটে কর্মরত আছে। আলী রাজ গত রমজান ঈদের বাড়িতে ছিল।
কাঁচা রাস্তা থেকে উঠে পাকা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে চলে আসলাম। পাকা রাস্তায় এসে আমি গাড়ির উপরে উঠে বসে পড়লাম। আসতে আসতে গাড়িওয়ালার সাথে অনেকক্ষণ আলাপ করলাম। তার শরীর কেমন আছে তার ছেলে মেয়ে কেমন আছে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। সে বললো সবাই আল্লাহর রহমতে ভালই আছে। এভাবে গল্প করতে করতে বাড়িতে চলে আসলাম।
বাড়িতে এসে বস্তাগুলো নামিয়ে রাখলাম। আমাদের কিছু ভুট্টা মাড়াই করার বাকি ছিল এসে দেখি মাড়াই করা হয়ে গেছে। ভুট্টা মাড়াই করতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। সেগুলো আমার কাকা এবং কাকাতো ভাই আমার বাবা মিলে করেছে। তারপর কিছুক্ষণ বাড়িতে বিশ্রাম নিলাম।
আজকে আবার আমাদের মরিচ তুলতে কিছু শ্রমিক নিয়েছিল। সেজন্য আবার মরিচের ক্ষেতে চলে আসলাম। এখানে কিছু বস্তামরিচ উঠানো হয়েছে। আবার একটা গাড়ির মাধ্যমে বাড়িতে নিয়ে আসতে হবে। সেজন্য ক্ষেতে কিছুক্ষণ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করলাম। গাড়ি আসার পর বস্তাগুলো গাড়ির মধ্যে তুলে দিলাম। তারপর বাড়িতে চলে আসলাম। সন্ধ্যা সাতটার দিকে গোসল করলাম। তারপর ৮:৩০ টার দিকে খাওয়া দাওয়া করলাম। তারপরে ঘুমাতে চলে গেলাম। এই ছিল আজকে আমার সারা দিন।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।