আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আজকের দিনটি কিভাবে কাটল তো আপনাদের সাথে শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।
আজকেও খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি। ঘুম থেকে উঠেই আমার দাঁত ব্রাশ করি। তারপর হাত মুখ ধুয়ে নিই। তারপর কিছুক্ষণ হাটা চলা করি। তারপর সকালের খাবার খাই। আজকের তেমন কোন কাজ নেই তাই বাড়িতেই বসে ছিলাম। বাড়িতে বসে একটা গাছের নিচে গল্প করিতেছিলাম। গল্প করতে করতে আমরা একটা খবর শুনতে পাই। সে খবরটা হল আমাদের বাড়ির সামনে যে একটা নদী আছে সেই নদী তে শুটিং হচ্ছে। শুটিং করিতেছে আমাদের এলাকার একটা ইউটিউব চ্যানেল।
আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ মিনিট হাটলেই সেই নদীর কাছে চলে যাওয়া যায়। এই নদীর নাম হচ্ছে ঝিনাই নদী। এই নদীর উৎস মুখ হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের একমাত্র নদ। এই নদ আয়তনের দিক থেকে সবচাইতে বড়। ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে শাখা হয়ে ঝিনাই নদী পতিত হয়েছে বংশী নদীতে গিয়ে। যাই হোক আমরা সেই শুটিং এর কাছাকাছি গেলাম। সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ শুটিং দেখলাম। দেখতে খুব ভালো লাগলো। তারপর সেখান থেকে আরেকটু পূর্ব দিকে গেলাম। সেখানে অনেক বড় একটা পুরাতন দিঘী রয়েছে।
দিঘীটির আয়তন পায় ২২ বিঘা। দিঘির চারিদিকে অনেক গাছ রয়েছে। এখানে আম জাম কাঁঠাল মেহগনি অনেক প্রজাতির গাছ রোপন করা হয়েছে। এটা আমাদের এলাকার মধ্যে একটা পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। পশ্চিম জামালপুরের মধ্যে এত বড় দীঘি আর নেই। জামালপুর শহর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে হওয়ায় শহর থেকে অনেক লোক এখানে ঘুরতে আসে। এখানে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ গাছ রয়েছে তাই সবাই এখানে এসে গাছের নিচে গাছের ছায়ায় বসে থাকে।
এখানে গাছ গুলো সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে। যা দেখতে খুব সুন্দর লাগে। এখানে সারিবদ্ধ গাছ গুলো দেখলে মনে হয় কোন এক সরকারি ব্যবস্থাপনায় লাগানো হয়েছে এগুলো। কিন্তু না এগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। এই দিঘির পাড়ে প্রবেশের জন্য কোন প্রকার প্রবেশ মূল্য দিতে হয় না। এরকম একটা নান্দনিক পরিবেশ যা খুব কম দেখা যায়। তাই এখানে একটা ছবি তুলে নিলাম।
যেহেতু অনেক গরম পড়িতেছে তাই গাছের নিচে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। এখানে দাঁড়িয়ে আমি এবং আমার চাচাতো ভাই মোঃ আশরাফুল ভাই কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। এখন আমাদের সাংসারিক কোন কাজ নেই তাই একটু দুই ভাইয়ে মিলে ঘুরে আসলাম।
দিঘির এক পাশে কয়েকটা ঘোড়া দেখতে পেলাম। ওরা গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগলো। যে ঘোড়াটা সবচাইতে ভালো দেখা যাচ্ছে সেই ঘোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। সেই ঘোড়ার সাথে কয়েকটা ছবি তুলে দিলাম। ঘোড়াগুলো গাছের নিচে ঘাস খাচ্ছে।
দিঘীর আশপাশে বেশ কিছুক্ষণ ঘুরে ঘুরে দেখার পর আবারো বাড়ির দিকে হেঁটে হেঁটে রওনা দিলাম। নদী থেকে দীঘির পাড় অনেক প্রচুর। সেখান থেকে মাটি কেটে গুহার মতো করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। যা দেখতে খুবই ভালো লাগে। মনে হয় কোন পাহাড় থেকে নামছি। এই রাস্তাটা এখানকার সৌন্দর্য অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
দীঘি দেখে আবার যখন নদীর মধ্যে আসলাম তখন দেখি আমার এক পরিচিত কাকা ধান কেটে ধানের আঁটিগুলোকে একত্রিত করছে। কাকার সাথে তার ছেলেও তার কাজে সাহায্য করছে। এই নদী একসময় খুবই খরস্রোতা নদী ছিল। তখন সারা বছর এখান থেকে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হতো। কালের পরিক্রমায় এখন আর ওরকম বন্যা হয় না। তাই এখানে বছরের প্রায় ৬ থেকে ৭ মাস হেঁটেই পারাপার হওয়া যায়। এখন এই নদীর মধ্যে অনেকে চাষাবাদ করে।
অনেকক্ষণ ঘুরে ঘুরে দেখার পর বাড়িতে চলে আসলাম। বাড়িতে এসে গোসল করে নিলাম। তারপর দুপুরের খাবার খেলাম। দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। তারপর বাজারে চলে গেলাম। বাজার থেকে কিছু কেনাকাটা করে বাড়িতে চলে আসলাম। বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। রাত ৯ টার দিকে রাতের খাবার খেলাম। এই ছিল আজকে আমার সারা দিন।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। |
---|