Better life with steem "the diary game"06/05/2023.simple day.

আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমি আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের দিনটি কিভাবে কাটল তো আপনাদের সাথে শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।

20230507_093449.jpg

20230507_091825.jpg

20230507_091752.jpg
প্রতিদিনের মতো আজকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি। ঘুম থেকে উঠেই দাঁত ব্রাশ করি। তারপর হাতমুখ ধুই। হাত মুখ ধুয়ে সকালের খাবার খাই। তারপর কাজের জন্য ক্ষেতে চলে যায়। আমার ভুট্টা ক্ষেতের পাশের ক্ষেতে বড় ভাই তার মরিচ তোলার জন্য কিছু মহিলা শ্রমিক নিয়েছে। প্রতিটা শ্রমিকের মূল্য ২৫০ টাকা সারাদিন কাজ করার জন্য। এই শ্রমিকেরা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে। উঠে তাদের পরিবারের জন্য রান্না বান্না করে। ছেলেমেয়েকে স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করে। বাচ্চাদেরকে খাওয়া-দাওয়া করায়। তারপর নিজে খায়। তারপর কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। মহিলা শ্রমিকদের একজন লিডার থাকে। সেই লিডারের কথা অনুযায়ী তারা কাজ করে থাকে। কবে কার মরিচ তুলবে তা নির্ধারণ করে ওই গ্রুপের লিডার। আজকে যাতে মরিচ তুলতেছে তার নাম মোঃ শাহিনুর রহমান।
20230506_130704.jpg
শাহিন ভাইয়ের এই মরিচের ক্ষেতের পরিমাণ এক একর। তার মরিচ তুলতে শ্রমিক লাগে ৩০ থেকে ৩৫ টা। শাহিন ভাই তার পরিবারের বড় ছেলে। সে তার সংসার দেখাশোনা করে। তার ছোট আরেক ভাই রয়েছে। তার নাম শামীম হোসেন। সে একটা ব্যাংকে চাকরি করে। শাহিন ভাইয়ের বাবা এখনো বেঁচে আছে। সে মাঝেমধ্যে তাদের কাজে অনেক সাহায্য করে। এবং কোন কাজ কখন কিভাবে করতে হবে তা দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। শাহিন ভাই এবং তার বাবার মধ্যে আন্তরিকতা ভালো আছে। দুজনের মধ্যে কখনোই কোন বিবাদ হয় না। তাদের মরিচের ক্ষেতের পাশের ক্ষেতেই আমাদের ভুট্টার ক্ষেত। সেই ক্ষেতে ভুট্টা কেমন হয়েছে তা দেখার জন্যই আমি ক্ষেতে গিয়েছিলাম। সেই ফাঁকে শাহীন ভাইয়ের সাথে কিছুক্ষণ মরিচের দাম নিয়ে আলাপ-আলোচনা করলাম। বর্তমানে কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচের দাম আরো কম ছিল। ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। এখন কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সে জন্যই মরিচ তোলার জন্য শ্রমিক নিয়েছে। তার সাথে কথা বলে আমি আমার ভুট্টার ক্ষেতে চলে গেলাম।

20230506_132318.jpg
ভুট্টা ক্ষেতের চতুরপাশে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখলাম। কিছুদিন আগে ক্ষেতে পানি দিয়েছি। কোন পোকা আবার আক্রমণ করেছে কিনা তা দেখলাম। পরে বাড়িতে চলে আসলাম।
20230506_121530.jpg

20230506_120413.jpg
বাড়িতে কিছু সিদ্ধদান শুকাতে বাকি ছিল। ধানগুলোকে অলট পালট করার জন্য বাড়িতে আসলাম। ধান গুলোকে পা দিয়ে নাড়াচড়া করে উলটপালট করলাম। পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। তারপর পানি পান করলাম। ধান গুলোকে আবার উলটপালট করতে গেলাম। তারপর কাঠের তৈরি পাট দিয়ে ধান ওলট-পালট করলাম। চাউল যেন ভালো হয় সেজন্য 15 থেকে 20 মিনিট পরপর ধান ওলট-পালট করে দিতে হয়। ধানের দুদিকে যেন ভালোভাবে শুকায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। এই ওলট পালট করার কাজ আমি আমার মা এবং আমার বউ মিলে করলাম।

20230506_123349.jpg
ধান ওলট-পালট করার পর বাড়ির পাশে গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে চলে গেলাম। সেখানে মুক্ত বাতাসে বিশ্রাম নিলাম। আমাদের এলাকায় এখন প্রচুর পরিমাণ গরম। প্রচন্ড সূর্যের তাপের কারণে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। কিছুক্ষণ পর পর বিশ্রাম নিতে হয়। এবং পানি পান করতে হয়। সেখানে বিশ্রাম নিতে নিতে আমার বাড়ির পাশেই থাকে এক কাকা বিশ্রাম নিতে গাছের নিচে আসলো।

20230506_123928.jpg
এই কাকার নাম মোহাম্মদ এরশাদ মিয়া। সে পেশায় একজন কৃষক। তার একটা ছেলে ও একটা মেয়ে সন্তান রয়েছে। এরশাদ কাকার বাবা-মা মারা গেছে। তারা তিন ভাই এক বোন। সেই ভাইদের মধ্যে ছোট এরশাদ কাকা। তারা সবাই আলাদা আলাদা ভাবে সংসার করে। এরশাদ কাকা তাই তার সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার চার পাচটা গরু রয়েছে। সেজন্য তাকে গরুর খাবার সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আর গরুর প্রধান খাদ্য হচ্ছে খড়। সেজন্য তাকে খড় শুকাতে আসতে হয়েছে। কিছুক্ষণ খড় ওলট-পালট করে সেও গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে চলে আসছে। তারপর সে বাড়িতে চলে আসলো।

20230506_124409.jpg
গাছের নিচে বসে থাকতে থাকতে দেখতে থাকি আর এক চাচা তার মহিষের গাড়ির মধ্যে ধানের বস্তা নিয়ে আসতেছে। সেই চাচার নাম মোঃ রইচ উদ্দিন। সে পেশায় একজন কৃষক ও গাড়িওয়ালা। সেই চাচার সাথে কিছুক্ষণ ভালো মন্দ আলাপ করলাম। তার আবাদের ধান কেমন হয়েছে তা জানতে চাইলাম। সে বললো আল্লাহর রহমতে আবাদ খুব ভালো হয়েছে। তারপর সেই গাড়ি নিয়ে চলে গেল।

20230506_125734.jpg

20230506_130221.jpg
কিছুক্ষণ পর আমি আমাদের গ্রামের রাস্তা দিয়ে আমাদের আরেকটি ধানের ক্ষেত দেখতে রওনা হলাম। রাস্তায় প্রচুর পরিমান গরম অনুভুতি হইল। তারপরও আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে ধানের ক্ষেতে চলে গেলাম। ধান কাটার উপযোগী হয়েছে কিনা তা দেখলাম। ধানের ক্ষেতের এপাশ থেকে ওই পাশ ঘুরে ঘুরে ভালো করে দেখলাম। আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ধান কাটার উপযোগী হবে। সেই ক্ষেত দেখে আবার আমার বাড়ির দিকে রওনা হলাম। পরে বাড়িতে এসে গোসল করলাম। গোসল করে কিছু খাবার খেলাম। খাবার খেয়ে বাজারের দিকে রওনা হলাম। কিছু কাঁচা বাজার করার জন্য।
20230506_184801.jpg
কিছু কাঁচাবাজার করার পর একটা ফুচকার দোকানে গিয়ে বসলাম। আমাদের বাজারে দুইটা ফুচকার দোকান রয়েছে। সে দোকানে বসে কিছু খাবার খেলাম। তারপর তার সাথে কিছু ভালো মন্দ আলাপ করলাম। তার ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন চলিতেছে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম। সে বললো আল্লাহর রহমতে ভালই চলিতেছে। সেই দোকানদার তার এই দোকান থেকেই উপার্জন করে সংসার চালায়। তার সাথে তার একটা ছেলেও কাজ করে। পরে আমি বাড়ির দিকে চলে আসলাম। বাড়িতে এসে হাতমুখ ধোলাম। পরে কিছুক্ষণ বাড়ির মধ্যে সবার সাথে আলাপ করলাম। রাত ৯ টা ৩০ মিনিটের দিকে রাত্রের খাবার খেলাম। খাবার খেয়ে ১৫ -২০ মিনিট বিশ্রাম নিলাম। তারপর কিছুক্ষণ মোবাইলের মাধ্যমে খবর দেখলাম। তারপরে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করলাম। রাত ১০:৩০ মিনিটের দিকে ঘুমাতে চলে গেলাম। এই ছিল আমার সারাদিনের কাজকর্ম।

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
10 Comments