অলৌকিক ঘটনা by aparajitoalamin

প্রিয় বন্ধুরা আস্সালামু আলাইকুম। আজ আমি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত অলৌকিক একটি ঘটনা আপনাদের বলবো।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে এই সত্যঘটনাটি। আমি আমার ঘটনা শুরু করছি।

Black And White Horror Movie Poster .png
Made by Canva

সেদিন ছিলো শনিবার। সকাল থেকেই মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছিলো। বাসায় মেহমান এসেছে। আমার ভাতিজা ইরাম। যার সাথে আমার সম্পর্ক আসলে চাচা ভাতিজা না বন্ধুর মতন। আমি তখন থাকতাম চট্রগ্রামের সাতকানিয়াতে। কেরানীহাটে বাসা আর যে বাসায় ভাড়া থাকি তার নাম সোনামিয়ার বিল্ডিং আর চাকরি করতাম কাসেম ড্রাইসেলসে যাকে সবাই সানলাইট কোম্পানী হিসেবে চিনে তার এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে। আনোয়ারা থেকে শুরু করে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ছিলো আমার কাজের এলাকা আর বাহন ছিলো কোম্পানীর দেয়া আমার ময়ূরপক্ষী টিভিএস মেট্রো ১০০ সিসি প্রথম সংস্করনের একটি মোটর সাইকেল।

pexels-kelly-2396045.jpg
pexels

ঘটনাটা ২০১৪ সালের মার্চ মাসের ঘটনা। ইরাম কুমিল্লা থেকে আমার ওখানে বেড়াতে গিয়েছিলো। তার সাথে আড্ডা দেয়া যাবে ভেবেই আমার ভালো লাগছিলো।আমি সকালবেলা চলে যাবো কাজে চকোরিয়াতে নবী স্টোর নামে এক বিখ্যাত ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে।

pexels-polina-zimmerman-3746957.jpg
pexels

তাদের সাথে দেখা করে জরুরী কিছু ব্যবসায়িক আলাপ সারতে। কেরানীহাট থেকে আমিরাবাদ লোহাগাড়া তারপর চুনোতি রিজার্ভ ফরেস্ট এর উপর দিয়ে চকোরিয়া যেতে হবে। প্রায় ৬০-৬৫ কিলোমিটার রাস্তা আসতে যেতে ১৩০ কিলোমিটার। ইরাম বললো আমাকে নিয়ে চলেন তাহলে কিছুটা পথ আমি চালাবো বাইক আর কিছুটা আপনি আর ঘুরার মজাও হবে কাজও হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। দুজনে মিলে রওনা হলাম চকোরিয়াতে। সারাদিন ঘুরেফিরে কাজ করে যখন ফিরবো বা রওনা হবো তখন বাজে রাত ৯ টা। ঘটনার মুল দৃশ্য মূলত এখানেই।

pexels-bas-masseus-1253640.jpg
pexels

আমি বাইক চালাচ্ছি। ইরাম পেছনে বসা। বাইকের গতি সর্বোচ্চ ৪০ কারন বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা কক্সবাজার হাইওয়ে তখন বেশ সরু আর পিচ্ছিল থাকতো। আমার সামনে একটা ট্রাক সেও আস্তে ধীরে যাচ্ছে। আমরা দুজন গল্প করতে করতে আস্তে আস্তে যাচ্ছি যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। একটা সময় রাস্তা এতোটাই পিচ্ছিল আর একটু পর পর বাঁক যে বাইক ঘন্টায় বিশ কিলোমিটার গতিতে চালানো লাগছে।

pexels-burak-the-weekender-186408.jpg
pexels

রাস্তার বিপরীত দিক থেকে একটা স্কানিয়া বড় বাস আসতে ছিলো। তার হ্যালোজেন হেডলাইটে চতুর্দিক আলোকিতো। আমার চোখে নাইটভিশন চশমা। সমস্যা হয় না এসবে। আমি দেখলাম ট্রাকটা স্লো হতে হতে থেমে যাচ্ছে আর একটা মহিলা রাস্তার পাশের ঢালু ধানক্ষেত থেকে কোলে একটা বাচ্চা নিয়ে উঠে আসছে। মহিলার গায়ে কালো বোরখা মুখ ঢাকা তবে বাচ্চাটাকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। স্কানিয়া বাসটা যখন খুব কাছে তখন দেখলাম মহিলা রাস্তার মাঝে চলে আসলো আর বাসটা মহিলা আর বাচ্চাটার উপর দিয়ে চলে গেলো। চোখের সামনে এতোবড় একটা দুর্ঘটনা দেখে আমি স্তম্ভিত ও আতংকিত হয়ে পড়ি। ঘটনা ইরামও দেখেছিলো আর সেও চিৎকার দিয়ে ওঠে। ট্রাকটা ওখানেই ব্রেককষে দাড়িয়ে যায়।আর স্কানিয়া বাসটা নিজের গতিতে চলে গেছে সেখান থেকে। ট্রাকের হেডলাইট আর আমার বাইকের হেডলাইটের আলোতে দেখলাম রাস্তা ফাঁকা। কোথাও কিছু নেই। ঘটনাস্থল চুনতি রিজার্ভ ফরেস্ট।

pexels-charles-parker-5859666.jpg
pexels

এখানে দুর্ঘটনা হয়েছে রাস্তায় এক ফোঁটা রক্তের দাগ নেই। লাশের কোনো অস্তিত্ব নেই। ভৌতিক ঘটনাটায় হঠাৎই আমার শরীর ভার ভার লাগছিলো। ইরাম বললো ওরও একই অবস্থা।

pexels-ahmad-syahrir-758744.jpg
pexels

ট্রাকটা হঠাৎই স্টার্ট নিলো আর পাগলের মতোন চলতে লাগলো। সে পাগলের মতোন বারবার হর্ন দিচ্ছিলো আর রাস্তার ডানপাশে যেটাকে আমরা রং সাইড বলি সেখানে চলে যাচ্ছিলো। আমরা আসলে এটা কি দেখলাম। কোন ঘটনার সাক্ষি হলাম কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

pexels-renato-conti-2677843.jpg
pexels

একটু পর আরেকটা আজব ঘটনা দেখলাম। রাস্তার উপরে একটা হাতি দাড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির। চুনতি বনে হাতি আছে আমি জানতাম।সতর্কবানী দেখেছি। হাতিটা নড়ছিলো না।ট্রাক ড্রাইভার হর্ন দিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু হাতির নট নড়নচড়ন। এবার দেখলাম হাতির পায়ের নিচে একটা সরু গাছ আছে। প্রায় দশ মিনিট পড় হাতিটা নড়লো এবং গাছটা শুড়পেঁচিয়ে নিয়ে বনে ঢুকে গেলো। বিষ্ময়ে আতংকে আমারদের দুজনেরই অবস্থা খারাপ। তারপর আর কোনো সমস্যা হয়নি আমরা দুজনেই ঠিক মতন বাসায় পৌছাই। এবং দুজনেই জ্বরে আক্রান্ত হই।বাড়িতে ফোন করে আম্মাকে জানাতেই আম্মা বলেন ওটা কারিন জ্বিন ছিলো। উনি দোয়া শিখিয়ে দেন। পরদিন সকালে আমরা দুজনেই সুস্থ হয়ে যাই।

pexels-pedro-figueras-626155.jpg
pexels

ঘটনাটা আমার কাছে আজও এক অদ্ভুত রহস্য। সতের বছর চাকুরি জীবনে দেশের অনেক জায়গায় আমাকে বাইক নিয়ে যেতে হয়েছে।এমন অনেক আরো ঘটনা আছে আমার।ভবিষ্যতে আবার কখনও আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।সবাই ভালো থাকবেন।সুস্থ থাকবেন।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xyWsw1kHnXVkn7Qp6hme6bwxmeXAsiaziMYqPesnvAxBKoZxpvAxoJGLfGnEUeMr1gEv2DbujLXro4ihMK4nci7VnRSHt.png


--- @aparajitoalamin

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
1 Comment