আসসালামুয়ালাইকুম ও রমাদান মোবারক বন্ধুরা
@msharif ভাই আপনাকে ধন্যবাদ এই কন্টেস্ট টি দেবার জন্য। আমরা সবাই আমাদের কাজ নিয়ে ভীষন ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মাঝে সময় করে যখন আমরা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন্দের জন্য কেনা-কাটা করি তখন অনেক যত্ন ও ভালবাসা নিয়েই কাজটি করি। এর মাধ্যমে এঁকে অন্যের প্রতি আন্ত্রিকতা ও ভালবাসাও প্রকাশ পায়। এ বারের প্রতিযোগীতায় কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবেনা। তাই আমার মতো করেই আমি আমার আজকের ঈদ শপিং ডাইরি সাজিয়েছি।
Image made by Canva
আমি ছোটবেলা থেকেই শপিং এ যেতে খুব একটা পছন্দ করি না। আমার মা আমার সব কেনা-কাটা করে দিতেন। বিয়ের পর বাধ্য হয়ে আমাকেই যেতে হয় কেনা-কাটা করার জন্য। আমার স্কুল ১৭ রোজা পর্যন্ত খোলা থাকার কারনে শপিং এ যেতে পারছিলাম না। তাই স্কুল বন্ধের পর গতকাল গিয়েছিলাম শপিং এ। আমি ঘাটাইলে থাকি তাই ভাল কিছু কিনতে হলে আমাকে টাংগাইলে যেতে হয়।
আমি সাহারীর জন্য তিন টার দিকে উঠি। কিছু নফল ইবাদত করে সাহারী খেয়ে নামাজ পরে আবার ঘুমিয়ে নেই। যেহেতু আমার ছেলেরাও রোজা রাখে তাই সকালে নাস্তার ঝামেলা থাকেনা। আমি সকাল ৯ টার দিকে উঠে বাচ্চাদের উঠিয়ে রেডি হতে বলি যেহেতু ওরা কোচিং এ যাবে। আমিও রেডি হয়ে নেই। ১০ টায় গাড়ি আসতে বলেছি, তাই সবাই রেডি হয়ে নিলাম। ছেলেদের কোচিং এ নামিয়ে দিয়ে আমি চলে যাব মার্কেটে। আমাদের সাথে আমাদের প্রতিবেশী এক ভাবী ও তার ছেলে যে আমার ছোট ছেলের বন্ধু তারাও যাবে।
আমরা সময়মতো রওনা হলাম, আমার ছেলেরা হঠাত বলল যে তারাও শপিং এ যাবে। নিজেরা পছন্দ করে পাঞ্জাবি কিনবে। তাই ওদের ও নিয়ে নিলাম। ঠিক করলাম যে আমরা প্রথমে করোটিয়া যাবো, সেখান থেকে কিছু থ্রী-পিস ও যদি ভাল শাড়ী পাই কিনবো। গাড়ির পেছনের সিটে আমার ছোট ছেলে আর তার বন্ধু বসেছিল এবং যত রকম দুষ্টামি করা যায় করছিল।
করোটিয়া যেয়ে দেখলাম সেখানে ভীষণ ভিড়। মনে হচ্ছিল সবাই শপিং এ বেরিয়েছে, বাসায় আর কেউ নেই। যাই হোক আমি কিছু থ্রী-পিস কিনলাম। একটা নিজের জন্য আর বাকী গুলো আত্মীয়স্বজনদের জন্য। এর পর গেলাম শাড়ির দোকানে। আমার বড় ছেলেকে বলেছিলাম গাড়ীতে বসে থাকতে কিন্তু সে আমার সাথে সাথে ঘুরছিলো। শাড়ির দোকানে যেয়ে আমি কিছু শাড়ি দেখতে চাইলাম। দোকানদার অনেকগুলো শাড়ি নিয়ে এলো। সব শাড়ি খুলে খুলে দেখাচ্ছিলো। আমি বললাম ভাই এতো শাড়ি খুলে দেখানোর দরকার নেই। যেটা পছন্দ সেটাই খুলে দেখান। সেলস ম্যান বলল আপা খুলে না দেখালে বুঝবেন কিভাবে যে শাড়িগুলো কেমন। আসলে তার ব্যবহারের কারনেই আমি আমার জন্য একটা ভাল মানের শাড়ি নিলাম। আমার ছেলে দোকান থেকে বের হয়ে বলল আম্মু তোমাদের উচিৎ ছিল সেলস ম্যান কে শাড়ি দেখানোর জন্য শাড়ি প্রতি ৫০ টাকা করে দেয়া।
করোটিয়ার পার্ট শেষ করে গেলাম টাংগাইলে। সেখানে ছেলেদের ও তাদের বাবার জন্য পাঞ্জাবী কিনলাম। আমার ছেলেরা তাদের পছন্দমতো পাঞ্জাবী নিলো। টাংগাইল থেকে ফেরার পথে ইফতারীর জন্য তরমুজ নিলাম। তরমুজ ৩৫ টাকা কেজি দরে ১৫০ টাকা, ৬.৪৩ স্টীম। ছোট ছেলে আর তার বন্ধুর জন্য কিছু খাবার কিনে দিলাম। যেহেতু আমাদের বাসায় যেতে দের ঘন্টার মতো লাগবে।
আমাদের বাসায় পৌঁছাতে প্রায় ৫ টা বেজে গিয়েছিল। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। মাগরীবের আজানের পর ইফতারী করে নিলাম। কিন্তু খুব টায়ার্ড লাগছিলো। তাই তাড়াতাড়ি সন্ধ্যার সব কাজ গুছিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। এই ছিলো আমার ঈদ শপিং ডাইরি।
এবার সবার জন্য প্রডাক্ট ও তাদের মূল্য তালিকা তুলে ধরলাম, যেহেতু কনটেস্ট এ এটি উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। |
---|
প্রডাক্ট | পরিমান | মূল্য টাকায় | টোটাল মূল্য | স্টিম মূল্য |
---|---|---|---|---|
থ্রি পিস | ১২ | বিভিন্ন দামের | ১৭,৬০০ | ৭৫৪.৭১ |
শাড়ী | ৫ | বিভিন্ন দামের | ১১,৬৫০ | ৩৬০.৪৫ |
পাঞ্জাবী | ৮ | বিভিন্ন দামের | ১১,৫০০ | ৪৯৩.১৩ |
টোটাল | ২৫ | -- | ৪০,৭৫০ | ১৭৪৭.৪২ |
এখানে উল্লেখ্য যে আমি একটি শাড়ি, আমার হাসবেন্ড একটি পাঞ্জা্বী ও ছেলেরা দুটি করে পাঞ্জাবী কিনেছে। বাকী গুলো আত্মীয় স্বজন দের জন্য কেনা হয়েছে। সবাই ভাল থাকুন , সুস্থ্য থাকুন। ধন্যবাদ। |
---|
আমার তিন জন বন্ধু যারা এই কন্টেস্ট এ অংশ গ্রহন করলে আমি খুশী হবঃ