আমিঃ @hasina78
দেশঃ @bangladesh
আমাদের প্রত্যেকেরই ছোটবেলাটা অনেক সুন্দর স্বপ্নময় থাকে। কারণ তখন আমরা একটা আনন্দময় স্বপ্নের জগতে বাস করি। যেখানে থাকে না পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের বাঁধা নিষেধ ও রুঢ় বাস্তবতা। সে সময় জীবনটা থাকে আনন্দে ঝলমল রঙিন স্বপ্নে ঘেরা।
image made by canva
প্রতিটা শিশুর মত আমারও একটি চাইল্ড হুড ড্রিম ছিল। আমি চেয়েছিলাম জার্নালিস্ট হতে। খুব সম্ভবত বিটিভিতে একটা টেলকাম পাউডারের এড হতো যেখানে একটা মহিলা জার্নালিস্ট তার সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঝড়-বৃষ্টি, আগু্ জলোচ্ছ্বাস সবকিছুকে মারিয়ে চলছে সংবাদ সংগ্রহের জন্য। সেই এড টি আমার শিশু মনের দারুণ রেখা পাত করেছিল। আমিও স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম যে আমিও একদিন এমন একজন জার্নালিস্ট হব। দুর্যোগ মোকাবেলা করে সমস্ত সংবাদ সংগ্রহ করে নিয়ে আসবো। মনে মনে অনেক কাহিনীও সাজাতাম যে জার্নালিস্ট হয়ে খুব ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজে গিয়ে সফলতার সাথে সেখান থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে আসছি। ছেলে বেলার ছেলে মানুষী স্বপ্ন।
আমার ড্রিম প্রফেশন থেকে আমি বহু ক্রোশ দূরে আছি। মানুষের সব স্বপ্নই কি সফল হয়, আমারটাও হয়নি। আমার স্বপ্ন সফল না হবার পেছনে প্রধান দুইটি কারণ কাজ করেছে বলে আমি মনে করি।
১। এক আমার পরিবারের অনীহা। আমার বাবা-মা মনে করেছেন মেয়ে হিসেবে এই প্রফেশন আমার জন্য কখনোই উপযুক্ত নয়। আর আমি আমার পরিবারের বড় সন্তান। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা যা পছন্দ করেছেন সেটাই মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছি ভালো লাগুক আর না লাগুক।
২। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে আমাদের দেশের সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত। আমাদের সমাজ অলিখিতভাবে মেয়েদের জন্য কিছু প্রফেশন সিলেক্ট করে রেখেছে। এর বাইরে কোন মেয়ে যদি সে প্রফেশনকে নিজের করে নিতে চায় তাহলে তাকে পরিবার ও সমাজ থেকে নানাবিধ বাধা ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল । আমি সেই বাধা গুলো অতিক্রম করে আমার পছন্দের প্রফেশনকে বেছে নিতে পারিনি।
আমাদের বাঙালি মেয়েদের খুব সুন্দর একটা গুন আছে সেটি হচ্ছে নিজেকে পরিবার ও সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া।
আমিও তেমনি মেয়ে, মানিয়ে নিতে নিতে নিজের ড্রিম প্রফেশনের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আজ এই কনটেস্ট এর টপিক্ দেখে সেই ছোট্টবেলার স্বপ্নের কথা মনে পড়ে গেল। @msharif ভাইকে ধন্যবাদ আমার ছোট বেলার স্বপ্নময় ক্ষণ টি ফিরিয়ে দেবার জন্য।
আমি বর্তমানে একটি বিশেষ শিশুদের স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে আছি। এই বাচ্চাদের সাথে কাজ করতে আমার খুব ভালো লাগে। এই অসহায় বাচ্চাদের জন্য যদি সামান্য কিছু করতে পারি তবে আমার মন এক অনাবিল আনন্দে ভরে ওঠে। আমি কি হতে চেয়েছিলাম আর এখন কি হয়েছে এটা নিয়ে আসলে আমি খুব একটা চিন্তা করি না। আমি আমার বর্তমান প্রফেশন নিয়ে খুশি আছি। এই বাচ্চাদের জন্য কাজ করে আমি আমার মনের ভেতর এক অনাবিল প্রশান্তি অনুভব করি। সবচেয়ে বড় কথা আল্লাহ আমার জন্য আমার এই বর্তমান প্রফেশনকে শ্রেষ্ঠ মনে করেছেন, তাই আমার এই প্রফেশন কে নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে।
@enamul17
@mahadisalim
@memamun
@ismotara
@m-fdo