SEC-S10W1: "What one thing would you want to delete from the Earth?"

আসসালামুয়ালাইকুম


স্টিম এঙ্গেজমেন্ট চ্যালেঞ্জ ১০ এ মনোনীত হওয়ার জন্য @steem4bangladesh কে প্রথমে জানাই অভিনন্দন।


প্রথম সপ্তাহে আমাদের প্রিয় কমিউনিটিতে খুব সুন্দর একটি প্রশ্ন আমাদের জন্য দেয়া হয়েছে কন্টেস্ট হিসেবে "আপনার যদি বিশেষ ক্ষমতা থাকে তবে আপনি পৃথিবী থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে চান এমন একটি জিনিস কী?"

SEC-S10W1 What one thing would you want to delete from the Earth.png
image made by canva

আমি এ বিষয়ে আমার নিজস্ব মতামত কে তুলে ধরছি।


আপনার যদি পৃথিবী থেকে একটি জিনিস স্থায়ীভাবে মুছে ফেলার ক্ষমতা থাকে তবে তা কী হবে এবং কেন?

"কালো আর ধলো বাহিরে কেবল
ভিতরে সবারই সমান রাঙা"

কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের "মানুষ জাতি" কবিতার এই লাইনগুলো আমার মনকে সব সময় নাড়া দেয়।

যদি আমার ক্ষমতা থাকতো তবে আমি পৃথিবী থেকে সব রকম বৈষম্যকে দূর করে দিতাম। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সে হিসেবে আমরা সবাই এক মানব জাতির সদস্য । সবাই সৃষ্টির সেরা আশরাফুল মাখলুকাত। আমাদের সবার শরীরেই যে রক্ত বয়ে চলছে তার রঙ লাল , আমরা শত চেষ্টা করেও এই রংকে কিন্তু পরিবর্তন করতে পারবো না।

তারপরও আমাদের মাঝে কত বিভক্তি, কত ভেদাভেদ । সাদা-কালোর ভেদাভেদ, ধনী-গরীবের ভেদাভেদ, জাত পাতের ভেদাভেদ, সামাজিক অবস্থানের ভেদাভেদ। হিংসার বশবর্তী হয়ে এক মানুষ কেড়ে নিচ্ছে আরেক মানুষের প্রাণ। ধনী শোষণ করছে গরীবকে। পুরুষশাসিত সমাজে অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মহিলারা। জাত পাতের দোহাই দিয়ে মানুষকে অবদমিত করে রাখা হচ্ছে। সাদা-কালোর ভেদাভেদে আমরা প্রায়ই প্রানহানীর মত মর্মান্তিক ঘটনা দেখতে পাই। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও মানুষ তার যোগ্যতা অনুযায়ী অবস্থান পাচ্ছে না। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে লোভ, খোভ, হিংসা ও অপরাধের।

dis.png
image made by canva

এর অনুপস্থিতি কীভাবে সমাজ, প্রকৃতি এবং মানবজাতির উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে? ব্যাখ্যা করুন.

পরিবার, সমাজ, দেশ সব কিছুর মূলেই আমার কাছে মনে হয় এই বৈষম্য কাজ করে, সৃষ্টির করে অরাজকতা। যদি সমাজে বৈষম্য না থাকে তাহলে সমাজে একটা সুন্দর ভারসাম্য বজায় থাকবে। যার ফলে থাকবে না কোনো উঁচু নিচু ভেদাভেদ। থাকবে না হানাহানি । অপরাধ প্রবণতা অনেক কমে যাবে, কারণ যে সমাজে সবাই সমান, সেখানে সবাই সবাইকে সম্মানের সাথে দেখবে, সমান ভাবে মূল্যায়ন করবে, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই শান্তি বিরাজ করবে।

যখন সমাজে শান্তি বিরাজ করবে তখন মানুষের মধ্যে চাহিদার পরিমাণও কমে যাবে। স্বার্থের ব্যাপার না থাকার কারনে মানুষ তখন একে অন্যকে কিভাবে সাহায্য করা যায় সে চিন্তাটাই বেশি করবে। যার ফলশ্রুতিতে সমাজের পাশাপাশি প্রকৃতি ও উপকৃত হবে । মানুষ নিজের স্বার্থে গাছ কেটে ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করবে না, উঁচু উঁচু বিল্ডিং তৈরি করবে না, গবেষনার নামে পশু প্রাণীকে হত্যা করা হবে না। প্রাকৃতিক ভারসাম্যও বজায় থাকবে। এদিক থেকে প্রকৃতিও বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে।

সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে মানবজাতি। কারণ আপনি চিন্তা করে দেখুন যে সমাজে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ থাকবেনা, ধনী দরিদ্রকে শোষণ করবে না, মানুষ তার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবে, তার নিজের প্রাপ্য সম্মানটা বুঝে পাবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানবজাতি একটা সুন্দর সমাজ গঠন করতে সক্ষম হবে। এবং ফলশ্রুতিতে একটি শান্তিময় দেশ গঠন করতে সফল হবে ফলে পৃথিবীতে যুদ্ধবিগ্রহ কমে যাবে। এক দেশ কে আরেক দেশের শোষণ নিপীড়ন কমে যাবে। পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করবে। আমরা আমাদের স্বপ্নের পৃথিবীতে বাস করতে পারবো।

আমরা এটির বিকল্প হিসেবে কোন জিনিসটি ব্যবহার করতে পারি যা পরবর্তী সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে?

বৈষম্যর বিকল্প হিসেবে আমরা সম্পদের সুষ্ঠ বন্টন কে কাজে লাগাতে পারি।

By @hasina78.png
image made by canva

কারণ যখন সম্পদের সুষ্ঠ বন্টন হবে তখন ধনী-দরিদ্র, সাদাকালো জাতপাত এই ভাবনাগুলো থেকে আমার মতে মানুষ বেরিয়ে আসতে পারবে। যার ফলে আধুনিক পৃথিবী ধীরে ধীরে যে যুদ্ধ বিগ্রহ ও ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাকে আমরা রোধ করতে পারব। এ ব্যবস্থায় কেউ কারো মুখাপেক্ষী থাকবে না, কারো মধ্যে হিন্নমনতা কাজ করবে না। মানুষ মিলেমিশে একটা সুখী সমৃদ্ধ জাতি, দেশ ও পৃথিবী গড়তে সক্ষম হবে।

উপসংহার

পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের ব্যক্তিগত ছোট ছোট উদ্যোগই অনেক সময় অনেক বড় সমস্যার সমাধান করে দেয়। কাজেই আমাদের যে স্বল্প ক্ষমতা আছে তাই নিয়েই আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। একজনের দেখাদেখি অন্য অনেকেই এগিয়ে আসবে । তখন বিন্দু বিন্দু জল দিয়ে সিন্ধু তৈরি করার মত আমরাও পৃথিবীতে বিরাট কোন পজিটিভ পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব।

আমি @patjewell, @ismotara, @memamun, @mahadisalim, @jannatmou বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, এই কন্টেস্টে অংশ গ্রহন করার জন্য।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
24 Comments