লুকিয়ে থাকা কিছু কথা | ঈদের স্মৃতিচারণ। by @memamun


আসসালামু আলাইকুম

সবাই ভালো আছেন তো? আলহামদুলিল্লাহ আমি আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। তাই মনভরে আল্লাহর কাছে শুকুর গুজার করি। আল্লাহর তায়ালার এই সুস্থতার মতো দেয়া একটা বড়ো নিয়ামত পাওয়া আমার বড়ো সৌভাগ্য। আজ আমি এই কমিউনিটিতে নতুন একটা লেখা শেয়ার করতে যাচ্ছি। লেখাটা আমার খুব হৃদয়ের গহীন থেকে নেওয়া। মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করার অনুরোধ রইলো সবাইকে।


Picsart_23-05-07_08-07-17-591.jpg
edited by picsart app

👇 ঈদ স্মৃতিচারণ👇

প্রতি বছরই ঈদ আসে, ঈদ চলেও যায়। কিন্তু মনের কোণে লুকিয়ে থাকে ছোটবেলার ঈদের স্মৃতি। আহা কেমন ছিল দিনগুলো!'। ঈদ শব্দটা শুনলেই মন ছুঁয়ে যায়। খুশির আমেজ লাগে। হৃদয়ে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। এ শব্দটা আনন্দের আলাদা মাত্রা বহন করে। যে মাত্রা অন্য কোনো শব্দে রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ আনন্দ আয়োজন হলো ঈদ উৎসব। ঈদ ছোট-বড় সবার কাছে সমান গুরুত্ব বহন করে।

শৈশব, কৈশোর, যুব, বৃদ্ধ কোনো বয়সেই ঈদের খুশির আলাদা পার্থক্য থাকে না। সবার মনেই ঈদের আকর্ষণ কাজ করে। ঈদ মনকে দেয় আলাদা সতেজতা। ছোট-বড় সবাই যার যার অবস্থান থেকে ঈদকে হৃদয়ে গেঁথে নেয় এবং সকলের সাথে সমানতালে বিনোদনে শামিল হয়। তবে শৈশবের ঈদ হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নেয়। হৃদয়ে আলোড়ন করে। এখন আমাকে আলোড়িত করে শৈশবের ঈদগুলো।

৫/৬ বছর বয়স হতে রোজা রাখতাম। রোজা নিয়ে অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে। বয়স কম বলে রাতে সাহরীর সময় উঠাতেন না। বাবা-মা যখন সাহরী খাওয়া শুরু করতেন তখন বিছানায় এদিক-ওদিক মোড়ামুড়ি করতাম, আমিও ভাত খাবো বলে কান্না করতাম, প্রস্রাবের ভান করে জেগে যেতাম। এভাবেই সাহরী খেতে উঠতাম। বাবা-মায়ের শর্ত ছিলো খাও, তবে ভেঙ্গে-ভেঙ্গে রোজা রাখবা। আবার জ্ঞান দিতো ছোটদের দিনে ২/৩টা রোজা রাখতে হয়।

sky-5114501_1280.jpgsrc

সব শর্ত মেনেই খেতাম। তবে দিনে রোজা কিন্তু একটাই রাখতাম। এভাবেই ৬/৭ বছর বয়সে রোজা রাখার অভ্যাস করে ফেলি। ঈদের চাঁদ না দেখলে আনন্দে শতভাগ পূর্ণতা আসতো না। ২৯ রোজা শেষ হলেই ইফতার সেরে দৌড় দিতাম চাঁদ দেখতে। দেখা না পেলে ৩০ রোজা রাখতাম। তারপর চাঁদ দেখতাম। এমনও হয়েছে চাঁদ দেখার জন্যে গাছে উঠে যেতাম।

এদিক-ওদিক উঁকিঝুঁকি দিয়ে পশ্চিমের আকাশে চাঁদ খুঁজতাম। আবার কখনো মসজিদের গম্বুজের পিলারের উপরে উঠে চাঁদ খুঁজতাম। আর ঈদুল আযহার চাঁদ দেখার জন্যে আরবি জিলকদ মাসের শেষ তারিখে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখতাম। তারপর জিলহজ মাসের ৯ তারিখ সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখতাম। চাঁদ দেখা নিশ্চিত হলে ছোট-বড় সবাই মিলে খুব আনন্দ করতাম। আবার ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক স্লোগানে মিছিলও বের করতাম।

Picsart_23-05-07_08-38-50-014.jpg
edited by picsart app

ঈদের নামাজ আদায় করে কোলাকুলি করতাম। কোলাকুলিতে কি যে মজা হতো। ঈদে সালামি পাওয়ার জন্যে উদগ্রীব থাকতাম। তখন ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা সালামির প্রচলন ছিলো। বাড়ির চাচা, জেঠা, বড় ভাই, বড় বোন, এলাকার বড়দের কাছে সালামি চাইতাম। অনেককে পা ছুঁয়ে সালাম করেও সালামি আদায় করতাম। সালামির টাকা মায়ের কাছে জমা রাখতাম।

শৈশবের ঈদ মানেই নানুর বাড়ি বেড়াতে হবে। এটা শৈশবের ঈদ সংস্কৃতিরই অংশ। ঈদের পর দিনই চলে যেতাম নানুর বাড়ি। যদিও আমার জীবনে নানুকে দেখিনি, তবে মামার আদর ও মামাতো ভাইদের সাথে খুব মজা হতো। স্কুল ছুটি শেষ হওয়ার আগের দিন চলে আসতাম। শৈশবের ঈদ-স্মৃতি লেখতে গেলে এর যেনো শেষ নেই। আমাদের জীবনে শৈশব আর কখনোই ফিরে আসবে না।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো স্মৃতিচারণ করতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুরোনো সংস্কৃতিকে আগামীর অপসংস্কৃতি থেকে হৃদয়ে লালন করে দূরে থাকতে পারবে। শৈশবের ঈদ-স্মৃতি খুব মনে পড়ে। এখন কেমন যেনো সব আনন্দেই ভাটার টান। আগের মতো করে আর আনন্দ হয় না ঈদে। বাস্তবতার চাপে সবই যেনো হারিয়ে যাচ্ছে। মনে হয়,বড় ভালো ছিলো আমাদের ছোটবেলা! আবেগহীন ঈদ, অনুভূতিহীন ঈদ!

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkQ7tBpBpX6eXUV3ozscgGQrf481tXBaktZfegJaaSmKYAzFfC5Gm42Gcf7Sr3uCTPn97UQU8UXU5oupLLU3hNcr8aLGpCksMcA.png

আজ এই পর্যন্ত লিখেই ইতি টানলাম। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম।


A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddc7kmirM62LniYU4Tn1FyRDx3nNFQtn7ZntR7YK7CVnc7aDDhGxZSikZ7nVUF...upfTTzGb2sA9C3sU58TPFgNnkuDQ78KEksZWuyCCvpNxDVsxyFxDWtC7T7xyTGExbUZ9VpywG5rS2aM71iyo5fsgLHwkBG65RYQdfZ9RxFe6yJCx6Br67iM2qt (1).png


H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
4 Comments