আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আরো একটি নতুন বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি বাংলাদেশ। বাংলা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় দারুন দারুন সব দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো দেখে প্রতিদিন বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক মুগ্ধ হয়। পর্যটকরা প্রতি বছর যেসব স্থানে ভ্রমণ করতে যায় সেসব স্থানের মধ্যে সবচাইতে বেশি জনপ্রিয় স্থানগুলো হলো রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি বান্দরবান সিলেট এবং সীতাকুণ্ড। এই এলাকাগুলোতে বেশি ভ্রমণ করতে যাওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে এটা মেয়ের সৌন্দর্য অন্যান্য জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর এর চেয়ে বেশি সুন্দর। আমি পাহাড়টিও মানুষ যখনই সুযোগ পায় পাহাড়ে ভ্রমন করার উদ্দেশ্যে চলে যাই।সেই রকম একবার সময় সুযোগ করে ভ্রমণ করতে চলে গিয়েছিলাম খাগড়াছড়ি জেলায়। আর খাগড়াছড়ি জেলায় ভ্রমণ করতে যাওয়া মানেই হচ্ছে সাজেক ঘুরে আসা। আমরা মোটামুটি দশজনের একটা টি খাগড়াছড়ি গমন করতে গিয়েছিলাম। তিন দিন দুই রাতের এই ট্যুরে সবচাইতে বেশি মজা পেয়েছি সাজেকে।
প্রথম দিন খাগড়াছড়ি শহরের আশেপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করে তার পরের দিন একদম সকাল সকাল আমাদের চান্দের গাড়িতে করে রওনা দিলাম সাজেক ভ্যালির উদ্দেশ্যে। সকাল প্রায় আটটার দিকে আমাদের চান্দের গাড়ি আমাদেরকে নিতে চলে এলো আমাদের হোটেলের নিচে। সেখান থেকে সব কিছু গজ করে আমরা গাড়িতে উঠে পড়লাম। গাড়িতে ওঠার আগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে নিলাম যেগুলোর মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো পানি। কারণ সাজেকের মাঝে মধ্যে পানি সংকট দেখা দেয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি যদি সংরক্ষণ করে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে যেকোনো রকমের বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যাবে। সেই চিন্তা-ভাবনা করে আমরা প্রায় ২০ লিটার পানি আমাদের গাড়িতে করে নিয়ে গিয়েছিলাম সাজেক ভ্যালিতে। সাজেক পাহাড়ি ভয়ংকর একটি রাস্তা অতিক্রম করে পৌঁছাতে হয়। শুধু ভয়ংকর রাস্তায় নয় এই পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে শান্তি বাহিনী যে কোন মুহূর্তে তারা আক্রমণ করা সম্ভাবনা থাকে। তাই বাংলাদেশ আর্মির একটা দল নিরাপত্তা দিয়ে টুরিস্টদের কে সাজেকে নিয়ে যায়। খাগড়াছড়ি বাজার থেকে আর মেয়েদের এলাকায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের সময় লেগে গিয়েছিল প্রায় সাড়ে নয়টা। সেখানে গিয়ে দেখি অনেকগুলো চান্দের গাড়ি একটার পর একটা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রত্যেকটা গাড়ি অপেক্ষা করছে কখন অনুমতি পাওয়া যাবে সাজেকে যাওয়ার জন্য।
অবশেষে আর্মির পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়া গেল এবং আমাদেরকে সবুজ সিগনেল দিল যে এখানে আপাতত কোন বিপদ নেই। আর্মির একটি গাড়ি সবসময় অন্যান্য গাড়ির আগে থাকে তারা সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে কোন বিপদে আশঙ্কা আছে কিনা। প্রায় দশটা পার হওয়ার পর আমাদের কে নিরাপত্তা দিয়ে সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিল গাড়ি।দশটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটেরও বেশি পাহাড়ি উঁচু এবং নিচু আঁকা বাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম সাজেকে। সাজেক মূলত রাঙ্গামাটি জেলার একটি থানা কিন্তু খাগড়াছড়ি হয়ে এই এলাকায় যেতে হয়। সাজেকে পৌঁছার পর যখন গাড়ি থেকে নেমে দৃশ্য দেখে নজর দিলাম তখন চমৎকার একটা অনুভূতি আমার ভিতরে কাজ করলো যেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। সাজেককে মূল পর্যটন এলাকায় প্রবেশ করার আগে খুবই সুন্দর কারো কাজ করে একটা গেটের মতো তৈরি করা আছে যেটা দেখতে চমৎকার। সাজেকের দৃশ্যের সাথে সাথে এখানের সবচাইতে আকর্ষণীয় আরো একটা অংশ হলো এখানকার প্রত্যেকটার রিসোর্ট। সাজে কে তৈরিকৃত রিসেট গুলো একটা চেয়ে একটা চমৎকার ডিজাইন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সাজেক ভ্রমনের এই দৃশ্য গুলো একটু আকর্ষণীয়। অবশেষে আমাদের যেহেতু আগের থেকে হোটেলের রুম বুকিং করার ছিল আমরা আমাদের গন্তব্যে রওনা দিলাম। আমাদের হোটেল একদম সাজেকের মূল পর্যটন গেইটের পাশেই ছিল। অনেকক্ষণ পর্যন্ত জার্নি করার উপর একটু ক্লান্ত লাগছিল তাই ঘন্টাখানেক রেস্ট নেওয়ার জন্য রুমে চলে গেলাম। সাজেকের সৌন্দর্য এবং এখানকার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আরো কয়েকটি ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।