আসসালামু আলাইকুম
আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আরো একটি নতুন বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আমরা সবাই ভ্রমণ করতে ভালবাসি। পৃথিবীর সবচাইতে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসেবে কক্সবাজার প্রসিদ্ধ। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে চিহ্নিত কয়েকটি স্থান রয়েছে যেখানে পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কলাতলী পয়েন্ট সুগন্ধা পয়েন্ট এবং লাবনী পয়েন্ট। বেশিরভাগ পর্যটক বিন্দাস গন্ধ পয়েন্ট এবং কলাতলী পয়েন্টের দিকে বর্তমানে বেশি ঘোরাফেরা করে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আরো তিনটি স্থান রয়েছে যে স্থানগুলোতে সাধারণত পর্যটকরা ভ্রমণ করে না। আজকে এই স্থানগুলোর মধ্যে একটি সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আরো তিনটি স্থানের মধ্যে অন্যতম একটি হলো কবিতা চত্বর পয়েন্ট।
কবিতা চট্টর পয়েন্ট হওয়ার পেছনে একটা ইতিহাস রয়েছে। কক্সবাজারের একজন বিখ্যাত কবি আছে নুরুল হুদা তার নামে এখানে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেই মঞ্চের নাম নুরুল হুদা কবিতা মঞ্চ। এই নুরুল হুদা কবিতা মন্ত্র থেকে বড় গতিতে এই স্থানটির নাম কবিতা চত্তর নামে প্রসিদ্ধ হয়। খোদা কবিতা মঞ্চ তৈরি হওয়ার আগে এই এলাকাটার নাম বালিকা মাদ্রাসা সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত ছিল। কারণ এই রোডে যাওয়ার পথে একটা বালিকা মাদ্রাসা এবং এতিমখানা রয়েছে। আজকে আপনাদেরকে কবিতার চত্বরের কয়েকটি সৌন্দর্য স্থান সম্পর্কে জানাব
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যারা ভ্রমণ করতে আসে তাদের অন্যতম একটি আকর্ষণ হল পাহাড় এবং সাগর। পাহাড় এবং সাগর ছাড়াও পর্যটকদের আরও একটি দেখার বিষয় রয়েছে সেটা হল ঝাও বাগান। পর্যটকরা কক্সবাজারে এল আর ঝাউ বাগান ঢুকে ছবি তুলল না এমন কখনো হয় না। কিন্তু কলাতলী এবং সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে ঝাউ পাকানোর সংখ্যা একদম কমে গিয়েছে। আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঝাউগা আসছিল কিন্তু বর্তমানে সমুদ্রের পানির উচ্চতা এবং গতি বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় 100 ফুটের মতো ঝাউ গাছ পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। তাই লাবনীর পয়েন্ট থেকে শুরু করে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত ঝাউ গাছ দেখা যায় না। যারা সুগন্ধা পয়েন্টের নামে তারা সামান্য কিছু ঝাহক আছে দেখতে পায়।কিন্তু যাকে যাকে সারি সারি যাও বাগান যদি আপনারা উপভোগ করতে চান তাহলে আপনাদেরকে অবশ্যই যেতে হবে কবিতা চত্বর পয়েন্টে। কবিতা তত্ত্ব পয়েন্টের দুই দিকে প্রচুর পরিমাণে সারিবদ্ধ ভাবে ঝাউ বাগান রয়েছে। সমুদ্রের উত্তপ্ত বালিতে হেঁটে এসে ঝাউ বাগানের শীতল ছায়ায় আপনারা বিশ্রাম নিতে পারার মত ব্যবস্থা রয়েছে কবিতা চত্বরে। পরিবারকে নিয়ে ছোটখাটো একটা পিকনিক করার জন্য আদর্শ স্থান কবিতা চত্বর। কক্সবাজারের যারা স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছে তারা বেশিরভাগ সময় বারে বারে কোন পিকনিকের আয়োজন করলে কবিতা চত্বরটাকে বেছে নেয়।কারণ এই স্থানে পর্যটকের আনাগোনা কম থাকে তাই এদিকে খুব একটা ঝামেলা থাকে না নিরিবিলি একটি পরিবেশে বসে সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। আমি যে এলাকায় বসবাস করতাম সে এলাকার থেকে ১০ মিনিট পায়ে হাটে সমুদ্র সৈকতের কবিতা চত্বরে পয়েন্টে যাওয়া যেত। তাছাড়া আমার সবচাইতে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বালিকা মাদ্রাসার নিকটেই বসবাস করত তার সঙ্গে দেখা করার জন্য যখন তাদের বাড়ির দিকে যেতাম তখন দুই বন্ধু একসাথে কবিতা চত্বরে গিয়ে আড্ডা দিতাম।
কক্সবাজারের কবিতা তথ্য ছিল আমাদের জন্য প্রিয় স্থান কারণ এটা আমাদের বাড়ির সব চাইতে নিকটে ছিল। তাই বলতে গেলে আমাদের বন্ধুদের বেশিরভাগ সময়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য এই স্থানটা আমরা চিহ্নিত করতাম। সমুদ্রের সুন্দর ঢেউ এবং ঝাউ বাগানের শীতল ছায়ায় বসে আমরা সময় কাটাতাম। কবিতা চত্বরে টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে খুব সুন্দর একটি ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল যেখানে চাইলে পর্যটকরা গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারত। কিন্তু বছর দুয়েক আগে যখন একটা ঘূর্ণিঝড় এলো এবং সামুদ্রের পানি উত্তাল হয়েছিল তখন ছাওনিটা সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। এই কারণে তোর এলাকায় বেশ কিছু মানুষের আনাগোনা হয়েছিল। কবিতা চতুর এলাকার চারপাশের পরিবেশটা খুবই সুন্দর এটা আপনার মনকে পশান্তি এনে দেবে। কিন্তু কবিতা চত্বর পয়েন্টে একটা খারাপ দিক রয়েছে।
খারাপ দিক হল যেহেতু এটা একটু জনগণহীন পরিবেশ তাই সন্ধ্যার পর থেকে এই স্থানে বসবাস করা এবং এখানে সময় কাটানোটা নিরাপদ নয়। সাধারণত এই জায়গাটা সন্ধ্যার পরে অন্ধকার হয়েযায় এবং এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইটিং এর ব্যবস্থা নাই। আরো সমস্যা হলো এই জায়গায় টুরিস্ট পুলিশের কোন ঘাঁটি নেই এবং টহল পুলিশ হয়তোবা অনেকক্ষণ পরপর একবার এই জায়গায় টহল দেওয়ার জন্য আসে। তাই এই জায়গায় সন্ধ্যার পরে ছিনতাই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কবিতা চত্বর এলাকাটা ভ্রমণ করার জন্য উপযুক্ত সময়। আপনারা কখনো কক্সবাজার ভ্রমণে আসলে সুযোগ করে একদিন অবশ্যই কবিতা চত্বরে এলাকা ভ্রমণ করে আসবেন আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাআল্লাহ।