শৈশবের স্মৃতির স্মৃতিসৌধ ভ্রমণে একদিন

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আরো একটি নতুন বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো। কক্সবাজার শহর নিয়ে তো অনেক লিখলাম এবার বাংলাদেশের রাজধানী সম্পর্কে কিছু একটা লিখতে চেষ্টা করছি। ঢাকা শহর বর্তমানে পৃথিবীতে বসবাস অনুপযোগী শহরের তালিকার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু তবুও বেশিরভাগ মানুষ এই ঢাকা শহরের মধ্যেই বসবাস করতে চায়। কারণ এর মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি রয়েছে। আর বেশিরভাগ মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরেই আসে। ঢাকা শহরে বেশ কয়েকবার আমার যাওয়া হয়েছে তবে কাজের সন্ধানে হয়। ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরে গিয়েছি কয়েকবার। ঢাকা শহরের চারিদিকে বিল্ডিং এ পরিপূর্ণ থাকলেও এখানে বেশ কয়েকটি সুন্দর সুন্দর ভ্রমণ করার মত স্থান রয়েছে। ঢাকা শহরে ভ্রমণ করার মত একটি স্থান হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

20230331_170136.jpg

DhakaLocation Map

জাতীয় স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে সব সময় সেই ছোটবেলা থেকে বইয়ে পড়েছি এবং বইয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছে। সব সময় ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল যদি একবার জাতীয় কাছ থেকে দেখতে পারি তাহলে খুবই ভালো লাগতো।সর্বশেষ যখন ঢাকায় গিয়েছিলাম তখন পরিকল্পনা ছিল না যে কোথাও ঘুরতে বের হব। কারণ সর্বশেষ ঢাকা যাওয়া হয়েছিল চিকিৎসার উদ্দেশ্যে একজন রোগীকে নিয়ে। কিন্তু তবুও অবসর সময় বের করে ঘুরতে চলে গিয়েছিলাম জাতীয় স্মৃতিসৌধের দিকে। আমি ছিলাম মিরপুর ১ এ সেখান থেকে ঢাকা জাতীয় স্মৃতিসৌধের দূরত্ব ছিল অনেক। প্রায় ৪০ টাকা গাড়ি ভাড়া খরচ করে সাভারে যেতে হয়েছিল। আমার এক বড় ভাইকে নিয়ে জাতীয় স্মৃতির চোখ দেখার উদ্দেশ্যে রানা হয়ে গেছিলাম দুপুরে তিনটার দিকে। পৌঁছাতে পৌছাতে ঢাকার জ্যাম অতিক্রম করে আমাদের সময় লেগেছে প্রায় পাঁচটা। ততক্ষণ পর্যন্ত স্মৃতিসৌধ বন্ধ করার সময় হয়ে গিয়েছে। স্মৃতিসৌধের গেটে দাঁড়িয়ে দূর থেকে যখন স্মৃতিসৌধ তাকে দেখতে পেলাম তখন একটা আনন্দ কাজ করছিল। যেন ছোটবেলার বাংলা বইয়ের সেই পৃষ্ঠাটা আমার চোখে ভেসে উঠেছে।

20230331_170102.jpg

DhakaLocation Map

স্মৃতিসৌধের গেট দিয়ে ঢোকার পর এই অনেকগুলো মানুষকে দেখতে পেলাম যারা স্মৃতিসৌধ ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে এসেছে। স্মৃতিসৌধ আঙ্গিনাটা চমৎকারভাবে নানান রকমের ফুলের বাগান দ্বারা সাজানো ছিল। বেশিরভাগ যে ফুলটি ছিল সেটা হচ্ছে বিভিন্ন রকমের গাঁদা ফুল। স্মৃতিসৌধের মূলগেট দিয়ে ঢোকার পর মাঝে বরাবর গেলেই স্মৃতিসৌধের ব্যাখ্যা সম্পর্কে একটি দেয়ালে বিস্তারিত লেখা আছে। এই দেওয়ালের মধ্যে স্মৃতিসৌধের যে স্তম্ভ গুলো তৈরি করা হয়েছে এই স্তম্ভ গুলোর বৈশিষ্ট্য কি এবং স্মৃতিসৌধের যাবতীয় স্থাপনার প্রত্যেকটা বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এখানে বিস্তারিতভাবে বলা আছে। প্রথমেই সেখানে দাঁড়িয়ে মনোযোগ সহকারে লেখাটা পড়ে নিলাম কারণ এটার মাধ্যমে স্মৃতিসৌধের মূল কাহিনী জানা যাবে। যে যা কোন জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে অবশ্যই আগে সেই জায়গা সম্পর্কে বিস্তারিত যে বিষয়টা উল্লেখ করা থাকে সেটা আমাদের জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের ভ্রমণটা সফল হবে। আমাদের প্রত্যেকটা ভ্রমণ যেমন আনন্দ উল্লাস এর বিষয় থাকে ঠিক তেমনি শিক্ষামূলক বিষয় আমাদের থাকা উচিত। ভ্রমণ থেকে আমরা যে শিক্ষাটা লাভ করতে পারব সেটা আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারব।

20230331_170825.jpg

DhakaLocation Map

স্মৃতিসৌধের কিছু দুর সামনে যাওয়ার পর একটি খালি জায়গার মত জায়গা রয়েছে যেখানে বসে সবাই স্থিতিশোধটাকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবে। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণের সামনে সুন্দর পানির ঝর্ণা রয়েছে যে ঝর্ণাগুলো থেকে সুন্দর পানির ধারা বের হয়। দর্শকদের জন্য এটি একটি দৃষ্টিনন্দন ব্যাপার।স্মৃতিসৌধ কাছ থেকে দেখতে পেরে আসলেই খুব দারুণ একটা অনুভূতি হয়েছিল।স্মৃতিসৌধের একপাশে বেশ কিছু গাছ লাগানো রয়েছে। এই গাছগুলো বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরা লাগিয়েছে। প্রত্যেকটা গাছের পাশে কোন দেশের রাষ্ট্রদূত কিংবা কে এই গাছটি রোপন করেছে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা লেখা আছে। যেমন গাছের নাম কত তারিখ লাগানো হয়েছে কোন ব্যক্তি লাগিয়েছে এবং সে কোন দেশের এই বিষয়গুলো সম্পর্কে খুঁটি নাটিপ্রত্যেকটা বিষয় উল্লেখ করা আছে। ঢাকার মধ্যে ছুটির দিনে ভ্রমণ করার জন্য এটি অবশ্যই একটি আদর্শ জায়গা। ছুটির দিনে সবাই চায় একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে একটু ভ্রমণ করার জন্য। ঢাকা শহরে অট্টালিকার মাঝে এই আনন্দ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু তোদের দিকে গেলে এর প্রাকৃতিক সবুজ ঘেরা এলাকা মানুষের অন্তরে আর এক আলাদা প্রশান্তি এনে দিবে। সবকিছু মিলে স্মৃতি সবটি আসলেই একটি দেখার মত জায়গা। আমাদের সবার উচিত আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করা এবং সে স্থানের সম্পর্কে ধারণা নেওয়া এবং আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষা করা। আমরা সবাই ইনশাআল্লাহ বেশি বেশি দেশ ভ্রমণ করব দেশ সম্পর্কে জানব এবং দেশদের ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করব।

20230331_170346.jpg

DhakaLocation Map

ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি করার জন্য আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
3 Comments