খাগড়াছড়ি সৌন্দর্যমন্ডিত এলাকায় সাজেক ভ্রমণ পর্ব ১

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আরো একটি নতুন বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি।সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা রইলো। আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করার একটা ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম অনেক আগে থেকেই। চূড়ান্তভাবে কোন চাকরিতে কিংবা ব্যবসায় জড়ানোর আগে চেষ্টা করেছি প্রায় বিভিন্ন জেলা ভ্রমণ করতে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটা জেলা ভ্রমণ করা হয়ে গিয়েছে এবং চেষ্টা করব পুনরায় নতুন নতুন জেলায় ভ্রমন করতে। আজকে আমার প্রিয় একটি স্থান ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা আপনাদের জানাবো। আমার দেখা সব চাইতে সুন্দর জায়গা গুলো রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে। আমি যেহেতু সাগরের পাড়ে বড় হয়েছি তাই সাগরের চেয়ে আমার পাহাড় বেশি ভালো লাগে। আমি যখনই সুযোগ পায় চেষ্টা করি পাহাড়ি এলাকার থেকে ভ্রমণ করতে যাওয়ার। কক্সবাজার হিমছড়ি এলাকাটাও কিন্তু পরিপূর্ণ পাহাড়ে ঘেরা একটি এলাকা। প্রতি সপ্তাহে একবার এই পাহাড়ি এলাকা গুলোতে প্রমাণ করার জন্য যেতাম। এইরকম উঁচু উঁচু পাহাড়ে ঘেরা একটি জেলা হচ্ছে খাগড়াছড়ি। আর কাকা চোরের বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে আমাদের সবার জানা আছে সেটা হলো সাজেক। সাজেকের অন্যতম এলাকার নাম যেখানে সবাই ঘুরতে যায় সেটা হল রুইলুই পাড়া। আমাদের বন্ধুরা সবাই মিলে অনেক পরিকল্পনা করার পর একটা মোটামুটি টিম তৈরি করে রইল পাঠাতে ভ্রমণ করতে যাওয়ার একটা অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছিল।

IMG_20201120_215222.jpg

khagrachhariLocation Map

খাগড়াছড়িতে ভ্রমণ করার জন্য পরিকল্পনা করে গিয়েছিলাম তিন দিন এবং দুই রাত থাকার। প্রথম দিন আমরা খাগড়াছড়ি জেলার অভ্যন্তরে যেসব সুন্দর সুন্দর জায়গাগুলো ছিল সেগুলোতে ভ্রমণ করেছি। খাগড়াছড়ির অভ্যন্তরীণ যে জায়গাগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে আছে
আলুটিলা গুহা হৃষাং ঝর্ণা মায়াবিনি লেক এবং খাগড়াছড়ির যেটা মূল বাজার রয়েছে সেটা। এটা ছাড়াও ভ্রমণ করার মত খাগড়াছড়িতে আরো অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে কিন্তু আমাদের হাতে সময় কম থাকায় আমরা এই তিনটি জায়গায় ভ্রমণ করেছিলাম। অভ্যন্তরীণ যে জায়গাগুলো ছিল সেগুলো সম্পর্কে ব্যাখ্যা বিস্তারিত আপনাদের পরে জানাবো আজকে আপনাদের জানাবো সাজেকের সৌন্দর্য সম্পর্কে। সাজকের সৌন্দর্য মোবাইলে এবং ভিডিওতে যেভাবে উপভোগ করেছি তার চেয়ে বেশি উপভোগ করেছি সরাসরি সাজাকে যাওয়ার পরে। আমরা সেই সকাল ৭ টা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বসে ছিলাম সাজেকে যাওয়ার জন্য আমাদের টুরিস্ট গাইডের মাধ্যমে। আমাদের গাড়ি দশটার মধ্যে পৌঁছে গেল আর্মি ক্যাম্পের মধ্যে যেখান থেকে সিকিউরিটি দিয়ে আমাদেরকে সাজেক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের এই গাড়ির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মোটামুটি প্রায় সাড়ে বারোটার মধ্যে আমাদের সবাইকে সাজেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। সাজে কেন আমার পরেই যে অনুভূতিটা ছিল সেই অনুভূতিটা মুখে বলে কিংবা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

IMG_20201123_163926.jpg

khagrachhariLocation Map

আমরা যখন চাচীকে ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম তখন পরিপূর্ণ শীতকালের টুরিস্ট সিজন ছিল তাই আগে থেকেই আমরা রিসোর্ট বুকিং করেছিলাম। কারণ তোর স্টেশনে আপনি যদি এডভান্স রুম বুকিং করে না যান তাহলে সেখানে গিয়ে রুম পাওয়া আপনার জন্য মুশকিল হয়ে যাবে। গাড়ি থেকে নেমে তাড়াতাড়ি রুমের পৌঁছানোর পর কাপড় একটু ফ্রেশ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাদিকের সৌন্দর্য দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। সাজেকের একদম প্রথম যে যেটা রয়েছে সেটার অভ্যন্তরে একটা পার্ক রয়েছে যেটা দেখতে দারুন। খুব সুন্দর সুন্দর কারো কাজ দিয়ে এই পার্কটি সাজানো হয়েছে। এই পার্কের মধ্যে যারা ঢুকবে তারা এর সৌন্দর্যমুক্ত হবেই। এরপরেই সাজেকের একটু দূরে যাওয়ার পর আছে একটি হেলিপ্যাড পয়েন্ট যেখানে আপনি চাইলে সরাসরি হেলিকপ্টার নিয়ে ল্যান্ড করতে পারবেন। হেলিপ্যাড পয়েন্ট এর সবচাইতে সুন্দর যে দৃশ্য দেখা যায় সেটা হচ্ছে এই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে আপনি একদম চারিদিকে শারদীকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। ছোট ছোট মনে হবে হ্যালিবাদের পাহাড়টি থেকে যখন আপনি নিচের দিকে তাকাবেন তখন আপনার সবকিছু পিপড়ার মত ছোট ছোট মনে হবে।এই পাহাড়টা যে আসলে কতটুকু উঁচু সেটা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না । কক্সবাজার শহরে আমি যে পাহাড়গুলোর দেখে বড় হয়েছি সে পাহাড়ের তুলনায় সাজেকের পাহাড় কম করে হলেও ১০ থেকে ২০ গুন বড়।
আমরা সাজেকে দাঁড়িয়ে সেখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে বসে হালকা নাস্তা করে নিলাম।

IMG_20201121_005547.jpg

IMG_20201120_211754-01.jpeg

khagrachhariLocation Map

হেলিপ্যাডের পাশে এই সুন্দর একটি বাগান তৈরি করা আছে যে বাগানটা খুব সুন্দর ফুল দ্বারা সাজানো রয়েছে। এখানে অনেকগুলো কাঠগোলা ফুল গাছ রয়েছে। আর মেয়েরা তো ফুল গাছ দেখলেই গাছের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । আমার সঙ্গে আমার বান্ধবীরা ছিল যারা সবাই সেই কাঠ গোলাপ ফুল গাছ থেকে একটি একটি করে ফুল ছিড়ে নিয়ে তাদের কানের নিচে গুছিয়ে দিল। হ্যালিপ্যাড চারপাশের সময়টাতে পড়ো বিকেল জুড়ে সময় কাটালাম এবং পাহাড়ের পাশ থেকে সূর্যটা ডুবে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। হ্যালিপ্যাড এর আশেপাশে যেই এলাকাটা আছে সেই এলাকাতে দারুন ধারণ কতগুলো ভবন তৈরি করা আছে। এই ভবনগুলো এবং পাশের যে সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করা আছে এটা দেখলে আমরা মনে করতে পারবো না যে এটা আসলে বাংলাদেশের কোন একটা অংশ। তাও আবার সাজেকের মত এত উঁচু পাহাড়ে এত সুন্দর করে এই রিসোর্টগুলো তৈরি করা হয়েছে সেটা কল্পনার বাইরে। মানুষকে পর্যটনের প্রতি আকর্ষণ করার জন্য এই রিসোর্ট এর মালিকরা দারুন সব উদ্যোগ নিয়েছে। সাজেক এলাকাতে রয়েছে দারুন দারুন সব রিসোর্ট মূলত অনেকে শুধুমাত্র সাজেকের রিসেটগুলোতে থাকার জন্যই সাজেক ভ্রমন করার জন্য যায়।কিন্তু পরিপূর্ণ টুরিস্ট সৃজন শুরু হওয়ার আগে যদি আপনি সাজেকে ভ্রমণ করে আসতে পারেন তাহলে আপনি সাজেকের পরিপূর্ণ সৌন্দর্যটা নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন । কারণ টুরিস্ট এর যাতায়াত যখন বেশি হয়ে যায় তখন মনে হয় আপনি নিউমার্কেটে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সাজেক ভবন করার জন্য আসেন। তাই আপনি যদি একান্তে একাকীত্বভাবে সুন্দর একটা পরিবেশ উপভোগ করতে চান তাহলে ফুল সৃজন শুরু হওয়ার আগেই সাজেক ভ্রমণ করে আসুন। এই ছিল সাজেকের দিনের বেলার ভ্রমণের ক্ষুদ্র কিছু অংশ সাজেকের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে একটা সিরিজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

IMG_20201120_080730-01.jpeg

khagrachhariLocation Map

ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now