আসসালামু আলাইকুম
আশা করি সবাই ভাল আছেন।
নতুন বিষয় নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি।
সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো। আমরা বাংলাদেশের একেকজন একেক প্রান্তে জন্মগ্রহণ করেছি এবং এক এক জেলায় বসবাস করি। কর্মসূত্র পারিবারিক সূত্রে হোক কিংবা বিভিন্ন কারণে আমরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হই। কখনো কখনো চট্টগ্রামের বাসিন্দারা কর্মের ক্ষেত্রে চলে যায় ঢাকাতে আবার ঢাকার বাসিন্দা চলে আসে চট্টগ্রাম কিংবা কক্সবাজারে। এবং আমাদের জীবন অতিক্রম হয়ে যাচ্ছে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ঘোরাঘুরির মাধ্যমে। আমাদের আত্মীয়স্বজনরা যখন ভিন্ন জেলায় যায় এবং সেখানে থাকা শুরু করে তখন সেই এলাকায় ভ্রমণ করার একটা সুযোগ হয়ে যায়। আত্মীয় স্বজনের খুজে নেওয়া এটাই ভারতের অংশ তাই আমাদের সকলকে আমাদের কাছের মানুষদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা উচিত। এইরকম ভাবে আমি চেষ্টা করি সব সময় আমার কাছের মানুষ আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে অন্তত নিয়মিত যোগাযোগ রাখার। বছরে একবার হলেও সাময়িক সময়ের জন্য প্রত্যেকের বাসায় ঘুরে আসতে চেষ্টা করি। আমার এক ফুপির বাসা রয়েছে পটিয়ার নাইখাইন এলাকায়। একসময় বুদ্ধ সম্প্রদায়ের বসবাস সবচাইতে বেশি ছিল এ এলাকায় তাই এখানে কয়েকটি বুদ্ধমন্দির রয়েছে। প্রতিবছর একবার করে ফুপির বাসায় বেড়াতে যাই এবং আপুদের বাসার পাশেই একটা বুদ্ধমন্দির রয়েছে সেটাতে ভ্রমণ করে আসি।
চট্টগ্রাম জেলায় অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর খানা রয়েছে যেখানে দারুণ সব ভ্রমন করার মত স্থান রয়েছে। চট্টগ্রামের গ্রাম গুলো খুবই সুন্দর বিস্তীর্ণ এবং চারিপাশে সবুজের সমারোহ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় যেমন হিন্দু এবং বুদ্ধদের বসবাস ছিল। ঠিক তেমনি কালের বিবর্তনে এখানে মুসলিমদের বসবাস শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামকে বারো আউলিয়ার দেশ বলা হয় চট্টগ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় বসবাস রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের। তাই এখানে প্রচুর পরিমাণে মসজিদ এবং পীর আউলিয়াদের মাজার রয়েছে অনেক। চট্টগ্রাম এলাকাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ওরস পালন করা হয় প্রত্যেকটা মাজারে। চট্টগ্রামের বিখ্যাত যে ওরসগুলো হয় সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাইজভান্ডার শরীফ দরবার এবং মোহছেন আউলিয়ার ওরস এক অর্জন আউলিয়া খুবই জনপ্রিয় চট্টগ্রাম এলাকায়। তাই চট্টগ্রামের বিভিন্ন মাজার সহ মসজিদে নামাজ পড়ার আলাদা একটা শখ রয়েছে। আমার আত্মীয়-স্বজন বেশিরভাগ কক্স চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকার কারণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমন করার সুযোগ হয়েছে। চন্দনাইশ এলাকা থেকে পটিয়ার শেষ পর্যন্ত এই এলাকার মধ্যে অনেকগুলো মাজার রয়েছে। আর মুসলিমদের এলাকার মধ্যে যখন অন্য কোন ধর্মের মানুষরা বসবাস করে তখন তারা নিজেদেরকে অসহায় মনে করে। কিন্তু নাইখাইন এলাকাটার মধ্যে গেলে দেখা যায় এখানে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ সবার সাথে খুবই ভালো একটা সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করছে।
ফুফির বাসায় যখনই বেড়াতে যাই এবং মন্দিরটা ভ্রমণ করার জন্য যখন যেতাম তখন সেখানকার পুরোহিতদের দেখেছি তাদের আচরণ এবং কথাবার্তা খুবই ভালো। মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা কিংবা নিষেধ ছিল না। শুধু মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষার ক্ষেত্রে জুতা বাইরে রেখে ভিতরে খালি পায়ে হাঁটতে হতো। মন্দিরটা প্রথমে ছোট আকারে ছিল পরবর্তীতে সেখানকারবদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষরা মন্দিরের এলাকা বড় করার জন্য বেশ কিছু জায়গা অনুদান করেছে। পরবর্তীতে নতুন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে এবং বড় একটি বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হলো। অনেকদিন পর আবার যখন ফকির বাড়িতে বেড়াতে গেলাম এবং চিরচেনা এই বুদ্ধমন্দির ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে গেলাম তখন এই বুদ্ধ মূর্তিটি স্থাপন করা অবস্থায় দেখেছি। এইরকম ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো আমাদের দেশের সম্পদ এগুলো সব কিছু সংরক্ষণ করার দায়িত্ব আমাদের নিজেদের।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।