খেলাধুলা পছন্দ করো না এমন মানুষ হয়তো খুব কম পাওয়া যাবে।
পৃথিবীতে যে কয়েকটি খেলা বিখ্যাত তার মধ্যে ক্রিকেট এবং ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা।
কিছুদিন আগে ক্রিকেট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে ।বর্তমান গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ ওয়াল্ড কাপ ফুটবল মেতে উঠেছে সমগ্র পৃথিবীর খেলা প্রিয় মানুষজন ।
দেখতে দেখতে প্রায় প্রথম পর্ব শেষের দিকে এখন নকআউট পর্ব শুরু হবে ।
প্রত্যেকটা মানুষ তার অবস্থান থেকে প্রিয় দল চিহ্নিত করে এবং সেই দলকে নিয়ে তারা খুবই আলোচনা এবং আনন্দিত ।
যে দলই সাপোর্ট করিনা কেন সেই দলের প্রতি নিজের আবেগ রাখা ভালো ।
কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা পরবর্তী দলের সমর্থকদের অপমান করার জন্য অনেক রকমের কলা কৌশল ব্যবহার করি ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে খেলাধুলা বিষয়ে কথাবার্তা গুলো মজার হলেও অনেক ক্ষেত্রে এই কথাগুলো মানুষের অন্তরে গিয়ে লাগে এবং তর্ক থেকে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়।
গত দশ দিন ওয়ার্ল্ডকাপ খেলা শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যবেক্ষণ করে যেটা দেখছি মানুষ একে অপরকে অপমান করতে করতে এতটা পর্যায়ে নিজে নেমে যাচ্ছে যে কথার কোন ব্যালেন্স থাকছে না ।
এই যে আমরা বন্ধুদের কিংবা ছোট ভাইকে কিংবা সমবয়সীদের কে কথার চলে অপমান করছি এবং কথার মধ্যে কোন নিয়ন্ত্রণ রাখছি না এর ফলে যে আমাদের কত পাপের মধ্যে আমরা জড়িয়ে যাচ্ছি সেটা নিয়ে কি আমরা একবার চিন্তা করি।
খেলাধুলা এটা একটা সাময়িক আনন্দের বিষয় এবং এর মাধ্যমে মানুষ সাময়িক আনন্দ পায় সামান্য সময়ের জন্য ।
দিনশেষে হার-জিত যাই হোক না কেন এক দুদিন পর মানুষ বিষয়টা ভুলে যায়।
এবং পুনরায় তাদের স্বাভাবিক জীবনে পদার্পণ করে ।
কিন্তু খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে তর্ক বিতর্ক কিংবা প্রতিবেশীর সঙ্গে তর্ক বিতর্ক আপনজনকে মজার চলে অপমান করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে একটি দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় যেটা দুই তিন দিনের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব নয়।
অপমান করতে গিয়ে আমরা একে অপরকে এমন এমন কিছু কথা বলে ফেলেছি যেগুলোর কারণে আমরা একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাই এবং অন্তরে ঘৃণা সৃষ্টি হয় ।
আর্জেন্টিনার প্রথম খেলার ম্যাচ যখন হেরে যায় তখন প্রচুর সমালোচনা হয় এবং এইটা নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে ফেসবুকে ট্রল এবং লেখালেখির তো শেষ ছিল না।
সর্বশেষ একটা নিউজ পড়েছিলাম যেখান থেকে জানতে পারি যে আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ার কারণে বন্ধুকে ট্রল করতে করতে অপমান করতে করতে এক পর্যায়ে বন্ধু রেগে গিয়ে দুই বন্ধুকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে ।
আঘাত এতটাই মারাত্মক ছিল যে দুজনকেই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল ।
যদিও বা পরবর্তী আপডেট তাদের অবস্থা সম্পর্কে কোন নিউজ আর পাওয়া যায়নি ।
এ কথাগুলোর মাধ্যমে আমি এটা বুঝাতে চাচ্ছি যে খেলা ধুলা সামান্য সময়ের একটি বিষয় এবং এটা সাময়িক সময়ের জন্য আসে এবং আবার শেষ হয়ে যায় ।
এই খেলাধুলা কেন্দ্র করে আমরা একে অপরকে অপমান করতে গিয়ে দূরে সরে যাই এর ফলে আমাদের লাভ তো কোন কিছুই হচ্ছে না বরং ক্ষতি হয় অনেক বেশি।
কিন্তু আমাদের উচিত ছিল এই খেলাধুলার বিষয় নিয়ে এত উৎফুল্ল না হয়ে খেলাধুলার বিষয়টাকে শুধুমাত্র খেলাধুলার মধ্যে সীমিত রাখা।
এই বিষয়টাকে আমরা যদি শুধু খেলাধুলা পর্যন্তই নিয়ন্ত্রণে রাখি তাহলে আমাদের পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম ।
আমরা একে অপরের পাশে থেকে যাব এবং কেউ কাউকে ঘৃণা দৃষ্টিতে দেখবেন না।
হ্যাঁ এটা ঠিক আছে বেশিভাগ বন্ধু খেলাধুলা দুষ্টামি করতে গিয়ে সাময়িক রাগান্বিত হলেও পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক ঠিক থাকে।
কিন্তু এখানে কিছু সংখ্যক বিশৃঙ্খল যে ঘটনাগুলো ঘটে সেটাও কিন্তু এ খেলাধুলা কেন্দ্রিক তর্ক বিতর্কের কারণেই হয়।
সব বন্ধু কিংবা সব মানুষের ক্ষেত্রে দূরত্ব তৈরি হয় না কিংবা ঘৃণা সৃষ্টি হয় না ।
কিন্তু তবুও আমরা খেলাধুলা কেন্দ্রিক সমালোচনা করতে গিয়ে অপরাধ জমানোর কোন মানে হয় না।
কারণ খেলাধুলা কেন্দ্রীক কথাবার্তা বলতে গিয়ে আমরা পরবর্তী টিমের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে এমন এমন সব বক্তব্য করি যে বক্তব্য গুলো সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই।
মনে রাখবেন অনুমান ভিত্তিক কথা বলা কিংবা প্রসঙ্গের বাইরে বানিয়ে কথা বলাও কিন্তু অপরাধের শামিল ।
সুতরাং আমরা খেলাধুলা দেখব খেলাধুলার মতো করে এটাকে আমরা আমাদের জীবনের অংশ হিসেবে ধরে নিব না ।আশা করি আপনাদের সবাইকে বিষয়টা বুঝাতে পেরেছি আমরা সবাই খেলা দেখব খেলা উপভোগ করবো এবং খেলার উল্লাসে একসাথে মেতে উঠবো ।
জয়পরাজয় যাই হোক না কেন দিনশেষে আমরা সবাই ভাই একে অপরের পাশে থাকবো।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে মনোযোগ সহকারে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।
আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হব।
ইনশাআল্লাহ