আসসালামু আলাইকুম।
আবারো একটি নতুন বিষয় নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি।
আশা করি সবাই ভাল আছেন সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো।
আমি ভ্রমণ প্রিয় মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই সুযোগ পাই তখন নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। ভ্রমণের মাধ্যমে অন্তরে পছন্দই তৈরি হয় মানসিক চাপ কমে। আলাদা আনন্দ কাজ করে। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় প্রত্যেকটা জেলায় ভ্রমণ করা হয়েছে। আমার পাহাড় খুব পছন্দ তাই যখনই সুযোগ পায় চেষ্টা করি পাহাড়ি এলাকাগুলোতে ভ্রমন করতে যাওয়ার। এভাবেই ভ্রমন করতে গিয়েছিলাম দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করার পরে বান্দরবান। আন্দোলনের অন্যতম সৌন্দর্য জায়গা গুলোর মধ্যে একটি হলেও দেবতাকুম।বান্দরবানের জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলোর পরে নতুন যে কয়েকটি পর্যটন স্থান আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। আমরা প্রায় ১০ জন বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করে দেবতা কম গিয়েছিলাম 2021 সালের শেষের দিকে।
বান্দরবান মূল শহর থেকে একটু দূরে পাহাড়ে ঘেরা একটি অঞ্চল। একদম সকাল সকাল আমাদের ভাড়া করা চান্দের গাড়ি আমাদের রিসোর্ট এর কাছাকাছি চলে আসলো দেবতাকুম নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আমরা প্রায় সাড়ে আটটার দিকে গাড়িতে উঠলাম এবং দেবতাকুম পৌঁছাতে আমাদের সময় লেগেছিল প্রায়ই এগারোটা পর্যন্ত। কোন একটি পাহাড়ি এলাকা পার করে যেতে হয় এবং সেখানে আর্মি চেকপোস্ট রয়েছে যেখানে আপনার যাবতীয় তথ্য শেয়ার করতে হবে। মূল যে আর্মির ঘাঁটি রয়েছে সেই ঘাটি দিয়ে দেবতা কুমির সৌন্দর্য স্থানটি রয়েছে সে স্থানে যেতে পা হেটে সময় লাগবে প্রায়ই দেড় ঘণ্টা থেকে দুই ঘন্টা।যেহেতু এখানে পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই তাই সবাইকে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। এই যে দেবতা কুম পর্যন্ত যাওয়ার পায়ে হাঁটার যে অভিজ্ঞতা এবং পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যেই দৃশ্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন সেটা আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। দেবতার কুমের এই দীর্ঘ রাস্তা অতিক্রম করার সময় একটু দূরে গিয়ে আমাদের প্রচুর পানির তৃষ্ণা পেয়ে গেল। এই গহীন রাস্তা অতিক্রম করার পথে একটা ব্রিজ রয়েছে যেটার পাশে একটা ছোট্ট পানি দ্বারা বয়ে গিয়েছে। এই পানি পাহাড় থেকে বেয়ে আছে তাই আমরা নিশ্চিন্তে সেখান থেকে পানি পান করলাম।
কিন্তু এখনো নির্ধারিত গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় আছে আরো অনেক। যতই পথ অতিক্রম করছি ততই ভালো লাগছে। নির্ধারিত গন্তব্য দেবতা কম যাওয়ার পথে একটি সুন্দর ঝরনা ও একটি প্রবাহমান খাল পার হয়ে যেতে হয়। তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে শীতকালে যাওয়ার জন্য। আমরাও যেহেতু শীতের একটু আগে গিয়েছি তাই খালটাতে তেমন পানি ছিল না কিন্তু স্রোত ছিল অনেক। একে অপরের হাত ধরে এই স্রোত পার হয়ে আর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটার পর আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। পাহাড়ের গভীর অরণ্যে যে সব সুন্দর জমে স্থান রয়েছে সেই জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে অবশ্যই একজন দক্ষ টুরিস্ট গাইডের প্রয়োজন। টুরিস্ট গাইড ছাড়া যদি পাহাড়ি এই এলাকায় ভ্রমণ করা হয় তাহলে পথ ভুল করে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের সাথেও ছিল সেই এলাকার একজন অভিজ্ঞ টুরিস্ট গাইড যে বিগত চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন টুরিস্ট কে এই স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। সব মিলে বান্দরবান ভ্রমণের সবচাইতে দারুন অনুভূতি ছিল দেবতাকুম এই অংশটা।
আপনাদের সুযোগ হলে কখনো বান্দরবান ভ্রমণ করবেন এবং দেশের সুন্দর সুন্দর জায়গা গুলোতে গমন করে আসবেন।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য আরো একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।