ভালোবাসতে চাই

IMG_20230211_175411.jpg

অনিক এর সাথে আমার প্রথম পরিচয় একটা পাবলিক ফেসবুক গ্রুপ এর কোনো এক পোস্ট এর কমেন্ট থেকে আমি একটা পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম সেই কমেন্ট এর রিপ্লাই করেছিল অনিক,
তারপর দেখি আমার ইনবক্স এ নক করেছে , সাধারণত আমি এরকম কেউ নক দিলে অ্যাকসেপ্ট করি না কিন্তু ওকে কেন যেনো অ্যাকসেপ্ট করলাম
received_659564072656409.jpeg
অনিক

ওই দিন ই আমাদের মধ্যে অনেক কথা হলো
আমরা দুজন পরিচিত হলাম , পরিচয় পর্ব তে জানতে পারলাম অনিক আমার ছোট ভাইয়ের পরিচিত এবং বেশ ভালো পরিচয় আছে ,ভালো সম্পর্ক
আমি তখন থার্ড সেমিস্টার অথবা ফোর্থ সেমিস্টার এ পড়ি আর অনিক তখন অনার্স হয়তো অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে আর পাশাপাশি ও একটা ছোট খাটো চাকরি করে , ঐশী মোটরস এর সিরাজগঞ্জ শো রুমে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে , অনিক এর অনার্স বর্তমান শেষ এখনো ও ওখানেই চাকরি করছে আর ভালো চাকরি র চেষ্টা করছে , আমারও ডিপ্লোমা শেষ হয়ে গেছে
অনিক এর সাথে পরিচয় হওয়ার পর কথা আরেকটু বেড়ে গেল, মানে অনিক আমাকে সবসময় মেসেজ দিতো এক কথায় সারাক্ষন
পরিচয় এর পরের দিন আমি আমার ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম অনিক এর ব্যাপারে , আমার মুখে অনিক এর কথা শুনে ভাই একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো তুই কিভাবে চিনলি??
আমি ছোট করে একটা হাসি দিয়ে বললাম কালকে পরিচয় হয়েছে ফেইসবুকে
আমার ভাই বলো বললো ও আচ্ছা বলেই সে নিজের ফোনে মনোযোগ দিলো
আমি চলে আসলাম ভাই এর রুম থেকে
বেশ কিছুদিন কথা বলার পর বুঝতে পারলাম ছেলেটা একটু বেশি কথা বলে কিন্তু যথেষ্ট ভদ্র ,জ্ঞানী, এবং ইসলাম ভীরু ছেলে
received_230295653040757.jpeg

ওনার বেশি কথা বলার প্রবণতা দেখে আমি ওনার দাম দিলাম বাচাল
এভাবে আমরা মেসেঞ্জার এ কথা বলতে শুরু করলাম রেগুলার মাঝে মধ্যে ওনার বেশি কথা বলার জন্য বিরক্ত লাগতো ব্লক করে দিতাম উনি তখন আমার ছোট ভাই কে বলতো তোর বোন আমারে ব্লক করছে কেন ?
আমার ভাই এসে আমাকে বলতো আমি তখন খুলে দিতাম একরম কয়েকবার করছিলাম উনিও সেম কাজ করছেন
আমাদের কথা বলার কোনো বিষয় থাকতো না এমনি কথা নিয়েই অনেক কথা বলতাম কিন্তু কথার মধ্যে থাকতো বিশাল এক কালো পর্দা বা দেয়াল ও বলা যেতে পারে মানে ভুল করেও কখনো কোনো বাজে কথা বলতো না অনিক অন্য কোনো মেয়ে মানুষের সাথেও কথা বলত না কারণ আল্লাহ কে ভয় পায়।
আমার সাথেই কেন এত কথা বলতো সেটাও জানি না

received_1318161438776146.jpeg
অনিক
, আমরা এক দের বছর রেগুলার কথা বলি কিন্তু আমাদের কখনো কোথাও দেখা হয়নি বা অনিক কখনোই বলেনি আমরা একটা ছবি দেন দেখি কারণ পর্দা নারীর জন্য ফরয এটা অনিক খুব ভালো করে জানতো তাই কখনো চায়নি , এর মাঝে অনিক আমাদের একটা মেসেঞ্জার চ্যাট গ্রুপে অ্যাড করলো গিয়ে দেখি সেখানে তার আত্মীয় স্বজনদের গ্রুপ কিন্তু সেখানে আমাকে অ্যাড করলো, কেন করলো সেটাও একটা প্রশ্ন ছিল আমার মনে কিন্তু কখনো করা হয় নি,
হটাৎ খেয়াল করলাম অনিক আমাকে মেসেজ কম দিচ্ছে, বুঝতে পারলাম না কেন মেসেজ কম দেয়
ভাবলাম হয়তো প্রেমে পড়েছে কারো এর জন্য মেসেজ দেয় না যার প্রেমে পড়েছে তার সাথে কথা বলে ,এটা ভেবে আমি আমার মত আছি অনিক কে নিয়ে মাথা ঘামাই না , অনিক যে আমাকে একদম মেসেজ দেয় না বা ফোন দেয় না তা না কিন্তু দেয় মাঝে মধ্যে তো এর মধ্যেই একদিন আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা আপনি আগের মত আর মেসেজ দেন না কেন? কারো প্রেমে টেমে পড়েছেন নাকি?? বলেই আমি হাসলাম কিন্তু উনি নিরব ভাবে উত্তর দিলো মেয়েদের সাথে কম কথা বলায় ভালো,

আমি কথা টা শুনে ই হেসে উঠলাম আমার হাসি শুনেও উনি কিছু বলছে না
আমি বললাম আমার সাথে তো রেগুলার কথা বলতেন উনি বললেন কথা বলেছি এর জন্য এখন কম বলি কথা যত কথা বলবো তত গুনাহ বাড়বে বলে উনি আরো বললো এমনি এমনি কথা বলে, কোনো লাভ নাই ,বলে উনি যেন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোন রাখলেন আমি চুপ করে শুনছিলাম

তারপর কোনো এক ঈদ এর আগের দিন জিজ্ঞেস করলো আপনি কি ঈদ এর নামাজ পড়তে আসবেন মাঠে? আমি বললাম জি যাবো,
আমাদের এখানে মেয়েদের জুম্মা আর ঈদ এর নামাজ পড়ার জন্য ব্যাবস্থা আছে আলহামদুলিল্লাহ
তো আমরা গেলাম ঈদ এর দিন নামাজ শেষে দেখলাম বাইরে দাঁড়িয়ে আছে অনিক আমার থেকে বের অনেকক্ষানী ফাঁকে আমাকে দেখে মিষ্টি হাসলেন তারপর চলে গেলেন আমিও চলে আসলাম।
এটাই ছিল আমাদের প্রথম দেখা, তারপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি ঈদ এর দিন আমাদের এভাবে দেখা হয় ও অনেক দূরে দাঁড়িয়ে থাকে ওখান থেকে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে যায়

received_195152746475897.jpeg
অনিক
ও আমাকে যে কোনো বোরখায় ই চেনে সেটা বুঝি আমি ওর হাসি দেখে ওর চোখ দেখে
যখন অনিক আমার সাথে কথা বলা কমিয়ে দিলো তারপর থেকে ওর সাথে কথা হতো কয়েকদিন পর পর যখন কথা হতো তখন ওর কথা শুনে আমি বুঝতে পারতাম ও কেন কথা বলে না
আসলে অনিক আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে তাই কথা বলে না
আমি ব্যাপার টা বুঝতে পেরে অনিক কে আর এরকম কোনো প্রশ্ন করিনি যে কেন কথা কম বলে ,
কথা কম বলতে বলতে কথা বলা ই বন্ধ করে দিলো কয়েক মাস পর পর দুই/চার মিনিট কথা বলে রেখে দিতো
আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই এই সময় এমন ছেলে আছে যে কিনা আল্লাহ কে ভয় করে মেয়ে মানুষের সাথে কথা বলা বন্ধ করে যে মেয়েটা তার ভালোবাসার মানুষ
IMG_20230211_180137.jpg
ছোট ভাইয়ের সাথে ফটোশুট

একটা সময় এসে আমিও বুঝতে পারলাম আমিও অনিক কে ভালোবাসি কিন্তু কখনো আমিও বলিনি ওকে নিজের মনের কথা গুলো মনেই রেখে দিয়েছিলাম
বর্তমান -
কিছুদিন আগে একটা দীর্ঘ কথা বিরতির পর কথা বলে জানতে পারলাম অনিক এর অনার্স শেষ হয়েছে
তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি অনিক কে বিয়ে করবো কথা টা আমি বাসায় আম্মুকে বললাম আম্মু তেমন একটা আপত্তি করলো না কারণ অনিক কে আমাদের বাসার মোটামুটি সবাই চেনে কারণ অনিক এর চাচাতো ভাই এর সাথে আমার আব্বুর ভালো একটা সম্পর্ক, আমার আব্বু যেমন দীনদার ছেলে আমার জন্য খুঁজছে অনিক তেমন ই দিনদার ছেলে

তাই ওনাকে নক দিয়ে বললাম একটু তারাতারি কোনো ভালো চাকরি খুঁজতে আর আমার এক দুলাভাই ওষুধ কোম্পানি তে ভালো পোস্ট এ চাকরিরত আছেন তার কাছে অনিক এর একটা সি-ভি দিয়ে রাখলাম
অনিক কে চাকরি খোজার কথা বলায় অনিক ও বুঝতে পেরেছেন আমি যেন বলছি এটা তাই উনিও বললেন ঠিক আছে আমি চেষ্টা করছি বাকিটা আল্লাহ ভরসা
আরেকটা কথা আমাদের কিন্তু এখনো সামনা সামনি দেখা হয়নি আর কথা ও হয়নি
আমাদের পরিচয় পাঁচ বছর চলছে

দুয়া করবেন আপনারা আমাদের জন্য যেনো অনিক এর একটা ভালো চাকরি হয় আর আমাদের দুজনের মনের আশা পূরণ হোক।
অনিক কে বিয়ে করে ভালোবাসতে চাই

DeviceName
AndroidRealme c11
Camera13MP camera
LocationBangladesh
Short by@rabeya1
H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
1 Comment