স্টিমিটের বন্ধুরা,
আসসালামুয়ালাইকুম,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে ভালো আছি। বেশ কিছুদিন শারীরিক অসুস্থতা এবং কিছু ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে আপনাদের মাঝে পোস্ট করতে পারিনি। আসলে সুস্থতা আল্লাহতালার অনেক বড় একটি নেয়ামত। যেটা আমরা অসুস্থ না হলে কেউ অনুধাবন করতে পারি না। এই অপরিসীম নেয়ামত আমরা কিন্তু সুস্থ হলে আবার ভুলে যাই এটাই হচ্ছে আমাদের বাস্তবতা।
যাই হোক আল্লাহ তাআলা সুস্থতা দান করেছেন এজন্য আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া। আমি আজকে আপনাদের মাঝে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি জানিনা পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লাগবে। তবুও আমি চেষ্টা করি আমার পোষ্টের কিছু ভিন্নতা রাখার জন্য। এই ভিন্ন তার ধারাবাহিকতায় আমি আজকে আপনাদের মাঝে অল্প অল্প করে একটি প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমিয়ে রাখার টাকা এবং সেই ব্যাংক খোলার অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব, আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমাদের সকলেরই উচিত এরকম অল্প অল্প করে নিজের খরচ থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখা। আমরা কেন জানি সবাই এই সঞ্চয় করতে অনেক বেশি কার্পণ্যতা করি। কিন্তু যখন কোন বিপদে পড়ে যাই তখনই শুধু হায় হুতাশ করি যে হায় হায় কেন যে কিছু সঞ্চয় করলাম না? আজ যদি কিছু সঞ্চয় থাকতো তাহলে হয়তো এই বিপদ থেকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করতেন। সঞ্চয় আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক, এটা আমাদের সবার মাথায় রাখা উচিত। সর্বোপরি আমি সব সময় চেষ্টা করি মানে আমার যতটুক সাধ্যের মধ্যে থাকে ততটুকই আমি চেষ্টা করি অল্প অল্প করে কিছু সঞ্চয় করে রাখার।
আমার মূলত সংসারের জন্য তেমন বাজার সদাই করতে হয় না কারণ আমার স্বামী সব বাজার সদাই করে থাকে। এরপরেও আমাকে মাঝেমধ্যে বাজার করতে হয় কারণ আমার স্বামীর হয়তো অন্য কোন ব্যস্ততার কারণে বাজার করতে পারে নাই বা কোথাও গিয়েছে সে কারণেই আমাকে করতে হয়। আমি চেষ্টা করি আমার এই বাজার থেকে কিছু পরিমাণ হলো সঞ্চয় করে রাখার। তাছাড়া মাঝেমধ্যে আমার স্বামীর পকেট থেকেও বেশিরভাগ সময় নতুন টাকা পেলেই আমি তাকে বলে রেখে দেই এবং সেটাই আমি এই প্লাস্টিকের ব্যাংকে ঢুকিয়ে রাখি। এছাড়াও রয়েছে আমার ভাই-বোনেরা বা মে কেউ যদি আমাকে গিফট হিসেবে কিছু দিয়ে থাকে, আমার ভাইবোনেরা সব সময় আমাকে কিছু না কিছু দিয়ে থাকে বিশেষ করে আমার ভাইয়েরা দেশের বাইরে থাকে, বোনদের জন্য কিছু কিনে দিতে পারেনা তাই অনেক সময় টাকাগুলো পাঠিয়ে দেয়। তো সেই টাকাগুলো কিন্তু আমি এই প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমিয়ে রাখি ভবিষ্যতের বিপদ আপদ কে লক্ষ্য করে।
এছাড়াও অনেক সময় আমার ছেলে-মেয়েদের কেউ যদি গিফট দিয়ে থাকে বিশেষ করে টাকা গিফট করে থাকে আমার ছেলেমেয়েরাও সেগুলো আমাকে দিয়ে দেয় এবং তারা বলে দেয় যে তুমি তোমার ব্যাংকে ঢুকিয়ে রাখো। মূলত ব্যাংকের টাকা জমানোর এই দিকগুলো আমাদের সকলেরই জীবনে থাকে, আমরা যদি এই জিনিসগুলো খেয়াল করে টাকাগুলোকে ভবিষ্যৎ বিপদ-আপদের জন্য সঞ্চয় করে রাখি তাহলে আমাদের অনেক উপকারে আসবে এটা আমার বিশ্বাস। আসলে বলতে গেলে কি বিপদ-আপদ কখন যে কার কিভাবে আসে আমরা কিন্তু কেউ বলতে পারি না। তাই আমাদের ভবিষ্যতের এরকম বিপদ-আপদের শঙ্কায় সব সময় সতর্ক থাকা উচিত। আমার এই ব্যাংকে টাকা জমানোর বিষয়টি আমার পরিবারের সকলেই জানে, কিন্তু সেরকম কোন বড় বিপদ আপদ ছাড়া কেউ কখনো ব্যাংক খোলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায় না।
এবার আমি এই ব্যাংক কেন খুলেছি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। আসলে প্রায় দুই থেকে তিন বছর হল আমি এই ব্যাঙ্কে টাকা জমিয়েছি যখন যা পেরেছি তাই এই ব্যাংকে ঢুকিয়ে রেখেছি। এবার ডিসেম্বর জানুয়ারি মাস আসলে বাচ্চাদের ভর্তির নতুন পোশাক নতুন বই কেনাকাটা সবমিলিয়ে অনেক খরচ। আমার স্বামীর ব্যবসা অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেকটা কম থাকায় এই দুই মাসের খরচ বহন করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি বিষয়টি প্রতিনিয়ত লক্ষ করেছি, সে অনেকটা চিন্তিত থাকতো টাকা পয়সা নিয়ে কিভাবে ম্যানেজ করা যায় কিভাবে এই টাকাগুলো ব্যবস্থা করা যায়, আমার সাথে অনেক সময় আলোচনা করত। এত সমস্যা দেখে আমি আর থাকতে পারলাম না আমি তাকে বলেই ফেললাম যে তোমার প্রয়োজন হয় তুমি এই ব্যাংক খুলে টাকাগুলো নিয়ে আপাতত এই সমস্যাটার সাময়িক সমস্যা সমাধান করো যতটুক সম্ভব হয়। আমার এই কথাটা শুনে সে রীতিমত কিছুটা খুশি হয়ে গেল যদিও সে আমাকে বারবার নিষেধ করল যে না হয়তো তার চেয়ে বড় বিপদেও আমাদের এই টাকাগুলো সহযোগিতা করতে পারে। তখন আমি বললাম যে না আমরা আবার আস্তে আস্তে জমাবো আল্লাহ চাইলে আরো ভালো কিছু আমরা করতে পারবো, তুমি এটা নিয়ে তোমার এই খরচের ঝামেলাটা কিছুটা হল সমাধান করতে পারবে। আসলে বলতে গেলে কি এরকম একটা সময়ে এই সামান্য কিছু টাকাও অনেক উপকারে আসে।
এরপর আমরা দুজনে মিলেই ব্যাংকটাকে খুলেছি, খুলে টাকাগুলো গুনে দেখেছি অল্প অল্প করে মোটামুটি সাড়ে চার হাজার টাকা আমার এই ছোট্ট ব্যাঙ্কে জমা হয়েছে। আসলে টাকাটা বড় বিষয় নয় অল্প অল্প করে জমানো টাকা আমার স্বামীর এই সাময়িক সমস্যায় দিতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে। যাইহোক আজ এই পর্যন্ত, এই প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমানো টাকা এবং ব্যাংক থেকে টাকা বের করার যে অনুভূতিটা আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার পোস্টটি আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদান্তে
@sanuu