স্টিমিটের বন্ধুরা,
"আসসালামু আলাইকুম" আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি। আমার পরিবারের সবাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। আমি আজকে আমার গতদিনের দিনলিপি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও এই দিনটিও খুব সাধারন একটি দিন ছিল তারপরও এই দিনটি সম্পর্কে আমার যে কার্যক্রম গুলো ছিল সেগুলো পড়ে আপনাদের খুবই ভালো লাগবে।
প্রতিদিনের মতো খুব ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে অজু করে ফজর নামাজ আদায় করে নিলাম। যেহেতু দিনটি একটি বন্ধের দিন ছিল তাই বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার তেমন কোনো তাড়া ছিল না সেজন্যই নামাজ পড়ে কিছু তসবি তাহলীল করে আবার শুয়ে পড়ি। তারপর ঠিক আটটার সময় ঘুম থেকে উঠি সেই সাথে বাচ্চাদেরকে ও ঘুম থেকে উঠিয়ে সবাইকে ফ্রেশ করিয়ে নিলাম। আগেই বলেছি যেহেতু বাচ্চাদের স্কুল ছিল না তাই খুব তাড়াহুড়ো ছিল না। আর গতকালকে আমি সকালবেলায় নাস্তা তৈরি করিনি গরম গরম ভাত রান্না করে ফেললাম এবং সেই সাথে বেগুন দিয়ে একটা ভর্তা তৈরি করে নিলাম। বেগুন ভর্তা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে এবং আমার পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে। তাই মাঝেমধ্যে এই বেগুন ভর্তা তৈরি করি নিজেও খাই সবাইকে নিয়ে বেশ মজা করে খাওয়া হয়।
সকালে বেগুন ভর্তা আর ডাল দিয়ে ভাত খেয়ে আমার স্বামীও সে তার দোকানে চলে যায়। যেহেতু অন্যান্য দিনের মতো তেমন কোন তাড়া নেই বাচ্চাদেরকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার তাই সে আস্তে ধীরে উঠে খাওয়া দাওয়া করে তার দোকানে চলে যায়। এদিকে আমি দুপুরে কি রান্না করবো সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। যদিও সেদিন কোন কাঁচা বাজার ছিল না বাসায় তাই কি করবো নিজেই চলে গেলাম বাজার করতে। আর আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন খুব তরতাজা শাকসবজি নিয়ে আসলাম বাজার থেকে নিজের পছন্দমত।
যেহেতু সকালে কোন নাস্তা তৈরি করিনি বাজার করে আনার পর চিন্তা করলাম বন্ধের দিন বাচ্চাদের জন্য সকালে নাস্তাও তৈরি করিনি ভাত রান্না করে খাওয়ালাম দুপুরবেলা যদি সবজি রান্না করি তাহলে কেমন হয়। তাই সবজির আইটেমটা বাদ দিয়ে আগে থেকে কিনে আনা মহিষের মাংস ছিল বাসার ফ্রিজে, সেগুলো দুপুরবেলা রান্না করে ফেললাম। অবশ্যই এই মহিষের মাংসের রান্নার রেসিপিটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব পরবর্তী কোন একদিন। রান্নাবান্না শেষ করে ঘর ঝাড়ু মোছা দিয়ে পরিষ্কার করে নিজেই এবং বাচ্চাদের গোসল করিয়ে নিলাম। তারপর জোহরের নামাজ শেষ করে বাচ্চাদেরকে নিয়ে খেতে বসে গেলাম। এরমধ্যে আমার স্বামী ও চলে আসলো সেও গা গোসল ধুয়ে আমাদের সাথে খেতে বসলো। আমার বাচ্চারা আবার মাংস খুব পছন্দ করে তাই সেদিন তাদের খুব খুশি হচ্ছিল এবং খুব মজা করেই দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করল সবাই।
আমার স্বামী আবার আসার সময় আমার জন্য ২ কেজি পরিমাণে জলপাই নিয়ে আসলো, যদিও আমি তাকে বলে রেখেছিলাম নিয়ে আসার জন্য আমি আচার দিব সেই কারণে। তারপর বাচ্চাদেরকে দুপুরবেলায় ঘুম পাড়িয়ে নিজেই লেগে গেলাম জলপাইয়ের আচার তৈরি করার কাজে। ওইদিন আর আমার দুপুর বেলায় রেস্ট নেওয়া হলো না। জলপাই দেখলে আবার দেরি করতে মন চায় না তাই তাড়াতাড়ি আচার তৈরির জন্য লেগে গেলাম। যদিও এতে আমার স্বামী আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। এ জলপাইর আচার রেসিপি ও আমি আপনাদের মাঝে কোন একদিন শেয়ার করব। আচার বানানোর মাঝে আসরের নামাজ আদায় করে নিলাম। জলপাইর আচার করতে কিন্তু অনেক সময়ের প্রয়োজন প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছিল। এরপরেও খুব ধৈর্য ধরে আচার তৈরি করেছি। তারপর যথারীতি বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে তারা বিকেল বেলায় হাটাহাটি ও খেলাধুলা করার জন্য মাঠে চলে গেল। আর এর মধ্যে আমি ওদের জন্য বিকেলের নাস্তা রেডি করে নিলাম। তারপর সন্ধ্যা হলে ওরা বাসায় আসার পর আবার হাত মুখ ধুয়ে তাদেরকে নাস্তা খাওয়ায় দিয়ে পড়তে বসিয়ে দিলাম। এর মধ্যে আমি মাগরিবের নামাজে শেষ করে নিলাম।
আমিও ওদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ পড়ালেখা মধ্যে কাটিয়ে দিলাম কারণ বাচ্চাদের সাথে বসে না থাকলে ওরা পড়তে চায় না দুষ্টুমি করে। তাই ওদেরকে গাইড দেওয়ার জন্য ওদের সাথে প্রায় দুই ঘন্টার মত বসে পড়া শেষ করে তারপর তাদেরকে নিয়ে একটি নাটক দেখলাম। সেই আগের নাটকটি যেটা আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি আমার খুব পছন্দের একটি নাটক পর্ব আকারে দেখানো হয় তাই প্রায় সময় এই নাটকটি দেখা হয়। তারপর তারপর সবাই মিলে রাতের ডিনার শেষ করে নিলাম আর আমি বাচ্চাদেরকে শুয়ে দিয়ে নিজে এশার নামাজ আদায় করে নিলাম। এরপর আর দেরি করিনি নিজেই শুয়ে গেলাম আর এভাবে আমার শেষ হলো গতকালকের সাধারণ একটি দিনলিপি।
আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার দিনলিপিটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদান্তে
@sanuu