সকালটা শুরু হলো বাপ্পির ফোনে।ও ভোর ৫ টায় ডেকে তুলে বলল নিচে নামতে।আমিতো ভয় পেয়ে গেলাম কারো কোনো সমস্যা হলো কিনা।পরক্ষণেই মনে পড়ল ও হয়তো ওকে এগিয়ে দিয়ে আসার কথা বলছে।ওর জব পোস্টিং সাতক্ষীরা। স্বভাবতই সাতক্ষীরা গিয়ে অফিস করতে হলে এমন সময় রওয়ানা দিতেই হতো।বাপ্পি কখনো সকালে গিয়ে অফিস করতে রাজি না।ও আগের দিনই গন্তব্যে পৌঁছে যায়।আমিই বলতাম আগের দিন কেন যায় সে। এর আগে আমি কখনো এত সকালে ওর রওয়ানা হওয়া সম্পর্কে জানতাম না।আর শীতের সকালে তো এত সকালে বাইরে যাওয়া মোটামুটি অসম্ভব কাজ।সেই সাথে বপশ ঝুকিপূর্ণ ও।
যাইহোক আমি প্রস্তুতি নিয়ে নিচে নামলাম।মোটামুটিভাবে প্যাকেট হয়েই নামলাম আমি।বাইরে তাকিয়ে দেখি বেশ অন্ধকার। আমি আর ও রওয়ানা দিলাম ফকিরহাটের উদ্দেশ্যে।বাইক বাইরে বের করে যতটা না কুয়াশা মনে হচ্ছিল তার থেকে অনেকগুন কুয়াশা পড়েছে আজ।২/৩ হাত দূরে কি আছে তাও বেঝা যাচ্ছে না।বাইকের গতি ছিল ১২ কিমি/ঘন্টায়!!
কিছুদূর পর শ্মশান বাধে যাওয়ার পথে।সেখান থেকে যাওয়ার সময় গা ছম ছম করতে লাগলো। পরক্ষনেই দেখি প্রায় ১০/১২ টা কুকুর রাস্তা আটকে দাড়িয়ে আছে।এবার ব্যাপারটাতে আরও ভয় পেলাম।বাইক দ্রুত টেনে ওখান থেকে চলে গেলাম।কিন্তু মনে মনে ভাবছি ফেরার পথে তো একা ফিরব, তখন কি হবে।এরপর ফকিরহাটে ও কে নামিয়ে দিলাম।সেখান থেকে আমি একটা ছবি তুলে নিলাম।ফেরার পথে দেখি কুকুর গুলো ওখানে নাই। শ্মশান যখন ক্রস করি তখন কোনোদিকে না তাকিয়ে বাইক যথাসম্ভব স্পিডে চালাতে লাগলাম।মনে হচ্ছিল কেউ বসে আছে বাইকের পিছে!!
এরপর বাড়িতে এলাম,আবার একটু ঘুমিয়ে নিলাম।সকাল ৮:৩০ টায় উঠে অফিসের জন্য রেডি হলাম।আজ আবার আমাদের গ্রামে শীতলা পূজা।তাই ইচ্ছা ছিল দুপুরে বাড়ি চলে আসার।তবুও লাঞ্চ সাথে করে নিয়ে এলাম, যদি ছুটি না পায়।এরপর স্যারকে বুঝিয়ে বললাম সমস্যার কথা।সে বলল ১ টার দিকে চলে যেতে।আমিও কাজ মোটামুটি গুছিয়ে অন্য একজনকে বুঝিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।এরপর বাড়িতে গিয়ে ওয়াইফ কে বললাম রেডি হতে।সবাই রেডি হয়ে গাছতলায় চলে গেলাম।
পূর্বপুরুষেরা এইস্হানে পূজা আরম্ভ করেছিল। পাড়া থেকে একটু দূর কিন্তু তাদের সেই ধারাই বজায় রাখা হয়েছে। এরপর পূজা দেখতে লাগলাম।পূজা শেষ হতে প্রায় রাত ৭:৩০ টা বাজল।এরপর প্রসাদ নিয়ে মা কাকিদের নিয়ে বাড়িতে আসলাম।সবাই উপস করেছিল,তাই সবাই কে বললাম কিছু খেয়ে নিতে।সবাই যার যা ভাল লাগে সেটা খেয়ে নিল।এরপর সবাই মিলে আড্ডা শুরু করলাম।বেশ আনন্দে কাটল বাকি সময়।আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল বিবাহ।আমার ভাই থেকে শুরু করে কাজিনরা সবাই বিবাহযোগ্য।তাই তাদের বিয়ে নিয়ে আলোচনা হলো অনেক সময় নিয়ে।এরপর যার যার মতো ঘুমাতে চলে গেলাম।
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই।আমার পোস্টটি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্টে জানাবেন।