সকাল |
---|
বিকট ও ভারি শব্দ শুনে আজকে ঘুম ভেঙে গেছে । কয়েক সেকেন্ড কি হচ্ছে কিছু না বুঝতে পারলেও পরমূহুর্তেই সবকিছু ক্লিয়ার হয়ে গেল।প্রতিবছরই আজকের দিনে এই শব্দ পেয়েই সাধারণত ঘুম ভেঙে থাকে।আজ ১৬ ই ডিসেম্বর, বাংলাদেশের বিজয় দিবস। আজেকের এই দিনে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে একএিশ বার তোপধ্বনি করা হয়। আর সেই শব্দ আমি ধানমন্ডি থেকেও শুনতে পাই৷ কেপে কেঁপে ওঠে যেন আমাদের পুরো বিল্ডিংটাই এই শব্দে।
এই শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারনে বিরক্ত লাগার কথা কিন্তু তার বদলে এক অদ্ভুত ভালো লাগায় মন ভরে যায় ভালোলাগায়।পাশ থেকে প্রতিবার আমার স্বামী গুনতে থাকে ১,২,...৩১।এই পর্যন্ত এসে প্রতিবারই বলবে এবার কম করছে, গতবার আরও বেশি শব্দ করেছিলো। একেকবার একেক সংখ্যা বলে। কখনো ৩৫টা আবার কখনোবা এই সংখ্যা ৩৩ টা।
তোপধ্বনি শেষ হবার পরে আমার মনের মাঝে ঘুরতে থাকে আজকের দিনে ৩৫/৪০ জন পাকিস্তানি আর্মি সারারাত হেঁটে কিভাবে ভোর বেলা আমাদের বাড়িতে এসেছিলো সাভার ক্যান্টনমেন্ট এর রাস্তা চেনার জন্য। তারা সারেন্ডার করার জন্য যেতে চাইছিলো ভোরের মাঝেই, কারন ভোর হয়ে গেলে সাধারন মানুষ কিংবা মুক্তিবাহিনীর হাতে পরলে তাদের মেরে ফেলতো।
আমার চাচাতো ভাইকে থাপ্পড় দিয়ে ফেলে দেয়,দেখাতে না চাওয়ায়। পরে তাদের তাদের রাস্তা দেখিয়ে দেয় ঠিকই কিন্তু এর মাঝেই কেউ ধামরাই থানায় খবরটা পৌঁছে দিলে মুক্তিবাহিনী চলে আসে।
ছএভঙ্গ হয়ে যায় তারা...এরসাথে আরো অনেককিছুই এই কাহিনি আমি আমার স্বামীকে বলতে থাকি প্রতিবারএর মতোই।আর সে আধো আধো ঘুম লাগা চোখে হুম, হা করতে করতে আবার ঘুমিয়ে পরে।আমার গল্পের অত্যাচারে বেচারা আধমরা বিয়ের পর থেকেই।তখন একবার মনে হয়েছিলো কোথাও থেকে ঘুরে আসি কিন্তু আজকে ৩২ এ সব নেতা কর্মীরা আসবে তাই রাস্তা বন্ধ থাকবে।
এটা ভাবতে পরে আমিও আবার ঘুমিয়ে পরি আর ঘুম ভাঙ্গে একবারে ১০ টার দিকে।ওঠে রুটি বানানো ছিলো ফ্রিজে সেটা আর ডিম ভেজে দেই।ছেলেরা খাবে না বলে দেয়।
দুপুর |
---|
কি রান্না করবো ভাবতে ভাবতে আবারো মনে হয় যে কতদিন ঢাকার বাইরে যাই না।পরে আমার বড় ছেলেকে বলি সে বলে চলো। ও ওর বাবাকে বলার সাথে সেও রাজী হয়ে যায়। ছোট ছেলে যাবে না কারন ওর পরীক্ষা সামনে।পরে সিদ্ধান্ত নেই যাবো কোথাও। ওকে বাসায় রেখে আমাদের বের হতে হতেই ১২ টা বেজে যায় । তখনও ঠিক হয়নি কোথায় যাবো। পরে আমার এক ভাগ্নের সাথে কথা বলে ঠিক করা হয় লাঙ্গলবন্দ, বারদীর ওদিকে যাবো। ওই দিকটায় কখনো যাওয়া হয় নাই।
লোকনাথের জন্মভূমিও বারদি।দেখে আসবো তার বাড়িও। কিন্তু হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার পরই ছেলে বলতেছে কুমিল্লা চলে।ওর কথা রাখতেই কুমিল্লার দিকে এগিয়ে যাই আমরা। সেখানে খুব একটা সময় থাকা হয়নি।কারন দিন ছোট হবার কারনে আর ছোট ছেলেকে বাসায় একা রেখে গিয়েছি।
যার কারনে আবার দ্রুত রওনা দেই আমরা। রাস্তা ফাকা থাকায় দ্রুতই ঢাকার দিকে আসি কিন্তু শনিরআখরার পর থেকেই প্রচুর জ্যাম ছিলো ।
রাত |
---|
যেখানে সন্ধ্যার মাঝে ঢাকায়,আসার প্ল্যান ছিলো সেখানে আসতে আসতে ৮ টা বেজে যায়। আমি পা নিচে খুব বেশি একটা সময় ঝুলিয়ে রাখতে পারি না অসুস্থততার জন্য । যার কারনে আসা যাওয়া মিলিয়ে প্রায় ১৮০কি.মি. পুরো সময়টাই পা গাড়ির পেছনের সিটের ওপর তুলে রাখতে হয়েছে। পরে দেখি আর হাটতে পারি না।
বাসায় ফিরে ফ্রেশ হই।ছেলেদের জন্য খিচুড়ি নিয়ে এসেছিলাম রেস্টুরেন্ট থেকে। আর আমি আর ওদের বাবা ফ্রিজ থেকে রুটি বের করে খেয়ে নেই সালাদ দিয়ে।এরপর লিখতে বসি আজকের জন্য। সাথে ভাবি প্রচুর কাজ জমা হয়ে আছে।গতকালও কোন কমেন্ট করা হয় নাই, আজকেও করি নাই। আাগামী কাল কমেন্ট করতে হবে দ্বিগুণ পরিমানে।এগুলো ভাবতে ভাবতেই লিখতে থাকি।
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦